নির্মীয়মাণ ক্রীড়াঙ্গনের ইন্ডোরে তালা ঝুলিয়ে দিল শহরের কয়েকজন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড়। শুক্রবার রাতে রঘুনাথগঞ্জের ম্যাকেঞ্জি মাঠে ঘটেছে ঘটনাটি। অভিযোগ, এক বছর ধরে মাঠ সংস্কারের নামে ফুটবল, ক্রিকেট-সহ সব খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেকেএম ফুটবল প্রতিযোগিতাও করা যায় নি গত দু’বার। তবে ইন্ডোর চালু করে সেখানে মাস খানেক ধরে রাতে খেলা চলছে। কিন্তু মাঠ নষ্ট করা যাবে না সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও বই মেলার জন্য মাঠ জুড়ে কয়েক হাজার খুঁটি পোঁতা হয়েছে। এই ক্ষোভেই ওই খেলোয়াড়েরা ইন্ডোরের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানান জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলামের কাছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা দলের ফুটবলের এক সময়ের অধিনায়ক সুবীর ভকত বলেন, “এক বছর ধরে মাঠ বন্ধ। সংস্কার চলছে ধীর গতিতে। ফুটবলকে সামনে রেখে ওই প্রতিষ্ঠান গড়ার উদ্যোগ নেয় পুরসভা। অথচ শহরের একমাত্র মাঠে ফুটবলেরই অনুশীলন করা যাচ্ছে না। বলা হচ্ছে টাকা নেই। কিন্তু লক্ষাধিক টাকা খরচ করে সাজানো হয়েছে ইন্ডোর ভবন। ফুটবলার হিসেবে এটা মেনে নেওয়া যায়না। তাই প্রতিবাদে তালা ঝোলানো হয়েছে।” আর এক ফুটবলার বাবলু সরকার বলেন, “জঙ্গিপুরে কেকেএম প্রতিযোগিতায় রাজ্যের ২৫৬টি বড় দলের খেলা হচ্ছে। অথচ রঘুনাথগঞ্জের মানুষ ওই খেলা দেখতে পাচ্ছেন না। শহরবাসীর ক্ষোভ তো স্বাভাবিক।” শহরবাসীদের এই ক্ষোভকে স্বীকার করে নিয়ে জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “পুরসভা ওই ক্রীড়াঙ্গন তৈরির কাজ করছে। |
দেখাশোনার ভার দেওয়া হয়েছে এক ক্রীড়া কমিটিকে। তারা কিছুই জানায়নি পুরসভাকে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করব। মাঠ সংস্কারের সময়ে সিদ্ধান্ত হয় খুঁটি পুঁতে কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না। বই মেলা করার অনুমতিও ওরা আমার কাছ থেকে নেননি। মেলার কিছু উদ্যোক্তা দলেরই প্রভাবশালী নেতা। এ ভাবে চললে মাঠের ক্ষতি হবে। ওই মেলার সঙ্গে পুরসভার কোনও যোগ নেই।” কিন্তু বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক সোমনাথসিংহ রায় বলেন, “পুরপ্রধান ঠিক বলছেন না। পুরপ্রধানের উপস্থিতিতেই ম্যাকেঞ্জিতে বইমেলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মাঠের ক্ষতি না করেই মেলা হবে।” কংগ্রেসের জঙ্গিপুর পুরসভার কাউন্সিলার বিকাশ নন্দ বলেন, “ক্রীড়াঙ্গন তৈরির কমিটিতে আমি রয়েছি। অথচ কোনও সিদ্ধান্তই আমাকে জানানো হয়নি। এখনও পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, তা-ও জানা নেই। কেকেএম ফুটবলকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, অথচ বইমেলা অনুমতি পেয়েছে। এই দ্বিচারিতা লজ্জাজনক।” কেকেএম ফুটবলের কো-অর্ডিনেটর মুক্তি ধর বলেন, “ইন্ডোর চালু হয়েছে। সেখানে কেকেএমের দাবা ও ক্যারাম প্রতিযোগিতাগুলো তো করা যেতেই পারত। তাও করতে দেওয়া হয়নি। বইমেলা ছাড়পত্র পেল অথচ কেকেএম পেল না।” ক্রীড়াঙ্গন স্পোর্টস কমিটির সদস্য সুবোধ দাসও বলেন একই কথা। ক্রীড়া কমিটির প্রধান সুভাষ মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ইন্ডোর পুরসভা চালু করেনি। আমরাই কয়েকজন পকেট থেক পয়সা দিয়ে ইন্ডোরে খেলার ব্যবস্থা করেছি। ফুটবল মাঠ সংস্কারের জন্য অর্থ নেই। তাই সংস্কার আপাতত বন্ধ।” সিপিএমের পুরপ্রধান মাজহারুল ইসলাম বলেন, “কংগ্রেসের কেকেএম ফুটবল হবে না, অথচ সিপিএমের বইমেলা হবে। এতে আমার সায় নেই। খুব শীঘ্র এ ব্যাপারে সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |