রাস্তা বেহাল। তাই গত বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়ার বাগনান-শ্যামপুরের মধ্যে চলা বিভিন্ন রুটে বাস পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘটে নেমেছেন মালিকেরা। তাঁদের সঙ্গে ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন বাসচালক, কন্ডাক্টর এবং অটোরিকশা ও ট্রেকার-মালিকদের একাংশও। এর ফলে, সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। যাতায়াত করতে তাঁদের বিস্তর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বাগনান থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। উঠে গিয়েছে পিচ। বেরিয়ে গিয়েছে খানাখন্দ। দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। রবিবার ভোরেও শ্যামপুর থেকে একটি গাড়ি বাগনানে আসার পথে রায়দিঘির কাছে উল্টে যায়। মারা যান গাড়ির চালক অনুপ মাইতি (৩২)। তাঁর বাড়ি শ্যামপুরের চালতাপাড়ায়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা আতিয়ার খানের অভিযোগ, খারাপ রাস্তার কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। |
বাস-মালিকদের বক্তব্য, এক দিকে বাসভাড়া বাড়েনি। অন্য দিকে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেট্রল এবং যন্ত্রাংশের দাম। বেহাল রাস্তার জন্য তাঁদের বাসের গতি কম রাখতে হচ্ছে। ফলে, বেশিবার যাতায়াত করা যাচ্ছে না। এতে তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে। তা ছাড়া বাসের যন্ত্রাংশ ভাঙছে। টায়ার ফাটছে। বাস-মালিকেরা চান, আপাতত রাস্তা কিছুটা হলেও মেরামত করা হোক এবং কবে থেকে সেই কাজ শুরু করা হবে তা জানানো হোক। তা হলেই তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে রাজি। বাস-মালিকদের পক্ষে অরিজিৎ দলুই বলেন, “আমরা বিভিন্ন মহলে রাস্তা সারানোর আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাস্তা সারানোর কথা ঘোষণা করা হলেই ধর্মঘট তুলে নেওয়া হবে।” চালক-কন্ডাক্টরদের পক্ষে তৃণমূল অনুমোদিত বাস ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়নের সম্পাদক বুলুরাম সামন্ত বলেন, “রাস্তার যা খারাপ অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে বাস চালানো যাবে না। মালিকদের সঙ্গে তাই আমরাও ধর্মঘটে সামিল হয়েছি।”
বাগনান থেকে ছাড়া শ্যামপুরের বিভিন্ন রুটে প্রায় ৫০টি বাস সারাদিনে কয়েক বার যাতায়াত করে। সবই বন্ধ রয়েছে। উপায় না থাকায় যাত্রীরা উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর রুটের বাস বা ট্রেকারে করে যাতায়াত করছেন। ওই সব বাস বা ট্রেকারে সারাদিনই ভিড় থাকে। অনেককে তাই ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ অবস্থা যাত্রীদের।
হাওড়া ডিভিশনের পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রের খবর, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ৭ কোটি টাকার পরিকল্পনা নাবার্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন বলেন, “সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” |