উত্তর-পূর্বে পাহাড়লাইনে ঘনঘন মালগাড়ি ওল্টানোর ঘটনা ঠেকাতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তর-পূর্ব রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং-শিলচর এবং লামডিং-আগরতলা অংশে প্রায়ই মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়। ফলে মাঝপথে যাত্রিবাহী ট্রেনগুলিকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখতে হয়। যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। বিশেষ করে পাহাড়ের মধ্যে টেরেন দাঁড়িয়ে থাকলে খাবার, পানীয় জল কিছুই মেলে না। নিরাপত্তা নিয়েও উৎকণ্ঠায় ভোগেন সবাই। এমন ঘটনা প্রতি মাসেই চার-পাঁচটি ঘটে থাকে। কোনও কোনও মাসে আরও বেশি।
বদরপুর সফরে এসে লামডিংয়ের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) রাজেশকুমার গোয়েল জানিয়ে গেলেন, কেন এ ভাবে গাড়ি পড়ে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। এর কারণ হল--ট্র্যাক দুর্বল, ওয়াগনগুলি বহু পুরানো, সিগন্যালিং ব্যবস্থাও সব সময় ঠিকঠাক কাজ করে না ইত্যাদি। এখন সে সবের প্রতিবিধান পর্ব শুরু হচ্ছে বলে জানান এই রেলকর্তা।
কী ধরনের ব্যবস্থা?
গোয়েলের কথায়, সেফটি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং দুই সেকশনকে এ-দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। তাদের পরামর্শেই রেলপথের দুর্বল অংশগুলি সারিয়ে তোলা হচ্ছে। সিগন্যালিংয়ের সমস্যাগুলিও দুর করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওয়াগনগুলির মধ্যে ৮০টি বাতিল করা হয়েছে। আরও বহু ওয়াগনের মেরামতি চলছে। তিনি ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। গোয়েলের কথায়, “১ এপ্রিল থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এই অংশে বড় ধরনের কোনও অঘটন ছাড়া লাইন থেকে রেলগাড়ি ছিটকে পড়বে না। দেরিতে ট্রেন চলা নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, তাও দূর হবে। সব মিলিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।”
কিন্তু দুর্ঘটনাজনিত নিরাপত্তার দিক ছাড়াও যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এ লাইনে ঘন ঘন ডাকাতির জন্যও। বৃহস্পতিবার রাতেও করিমগঞ্জ স্টেশন ছাড়ার পর আগরতলা-শিলচর প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ডাকাতি হয়। অন্তত ৫০ জন যাত্রীর কাছ থেকে টাকাপয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গিয়ে বেশ ক’জন জখম হয়েছেন। শিবসাধন জমাতিয়া এক যাত্রীকে ভোজালি দিয়ে কোপ বসিয়ে দেয় এক ডাকাত।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে গোয়ল জানান, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য রেলে কর্মরত জওয়ানদের অনেককে তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে সব ট্রেনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। ভোটপর্ব মিটে গেলে এই সমস্যা থাকবে না। |