লাগাতার যৌথ অভিযান সত্ত্বেও ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী কার্যকলাপ কমেনি, বরং বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনই রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আর এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মাওবাদী হামলা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করল ঝাড়খণ্ড পুলিশ।
ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বর মাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তার পরই নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওড়িশা এবং ছত্তীসগঢ় সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল এলকাগুলিকে মাওবাদীদের শক্তঘাঁটি চিহ্নিত করে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গিয়েছে মাওবাদী তৎপরতা রয়ে গিয়েছে রাঁচি এবং তার লাগোয়া খুঁটি, হাজারিবাগ এমনকী বোকারো, ধানবাদ, পাকুড় জেলাতেও। তাই বিশেষ কোনও জেলা কিংবা এলাকার জন্য নয়, এখন রাজ্যের প্রতিটি জেলায় মাওবাদী হামলার আশঙ্কায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই ব্যাপারে আজ ঝাড়খণ্ড পুলিশের মুখপাত্র (আইজি) রাজকুমার মল্লিক বলেন, “ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করেই আগামী দিনে রাজ্যে মাওবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর জন্য সতর্কতামূলক সম্ভাব্য যাবতীয় প্রস্তুতিও চলছে।” প্রসঙ্গত পুলিশ কর্তারা জানান, গুমলা রেঞ্জ-সহ গঢ়বা, পলামু, লাতেহার, পূর্ব সিংভূম এবং চাইবাসা জেলার উপরে বিশেষ নজরদারি জারি রাখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা রিপোর্টের সূত্র ধরে পুলিশ জানিয়েছে, যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে মাওবাদীদের কিছু ঘাঁটি ভেঙে দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু গত তিন বছরের পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, রাজ্যে মাওবাদী হামলার ঘটনা কমেনি। বরং বেড়েছে। ২০০৯ সালে ঝাড়খণ্ডে নথিভুক্ত মাওবাদী আক্রমণের ঘটনা ৫১২টি। তবে তা ২০১০ সালে কমে দাঁড়ায় ৪৯৬-তে। কিন্তু ২০১১ সালে ফের মাওবাদী আক্রমণের ঘটনা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৪-এ। পুলিশি হেফাজত থেকে রাইফেল ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়ছে। সরকারি পরিসংখ্যান দিয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১০ সালে উগ্রপন্থী মাওবাদীরা বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে ঝাড়খণ্ড পুলিশের কাছ থেকে ১৫টি রাইফেল ছিনিয়ে নিয়েছিল। ২০১১ সালে বিভিন্ন সময়ে হামলা চালিয়ে পুলিশের ১৭টি রাইফেল কেড়ে নিয়েছে উগ্রপন্থীরা। গত চার মাসে মাওবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২৮ জন পুলিশ কর্মীর। |