ডাইনি অপবাদ দিয়ে অসমে ফের দুই মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে নির্মম ভাবে। শিবসাগরের সোনারিতে এক মহিলাকে দিনভর পেটানোর পরে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। অন্য দিকে শাণিতপুরের মিসামারি এলাকার মিলনপুরে এক মহিলাকে মেরে মাটিতে পুঁতে দিয়েছেন পড়শিরা। দু’টি ক্ষেত্রেই ঘটনার অনেক পরে খবর পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ, প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির প্রচার সত্ত্বেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসের দাপট কতটা তা আবার নতুন করে দেখা গেল। দু’টি ঘটনায় মোট ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এ পর্যন্ত। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে অসমে গত পাঁচ বছরে অন্তত ২০০ জনকে ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সম্প্রতি শিবসাগরের সোনারিতে জলা এলাকার হজনবস্তিতে সুভাষ সালোয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। কুসংস্কারগ্রস্ত সুভাষের পরিবার ও গ্রামবাসীদের একাংশের ধারণা হয়, ওই মৃত্যুর জন্য দায়ী ফুলেশ্বরী সালোয়া (৫০) নামে এক মহিলাই। গ্রামে নেতৃস্থানীয়দের নির্দেশে ফুলেশ্বরী দেবী তাঁর ছোট ছেলে পিয়ারিলালকে নিয়ে সুভাষের বাড়ি গেলে সেখানে তাঁদের বেঁধে রেখে শুরু হয় নির্যাতন।
পিয়ারিলাল পুলিশকে জানিয়েছেন, রামচরণ নামে এক ব্যক্তির ঘরে আটকে রেখে ফুলেশ্বরী দেবীকে দিয়ে বলানোর চেষ্টা চলে যে তিনি ‘ডাইনি’। ফুলেশ্বরী তা মানতে রাজি না হওয়ায় জনা পঞ্চাশ নারী ও পুরুষ নাগাড়ে তাঁকে পেটাতে থাকেন। পিয়ারিলাল পালিয়ে গিয়ে তাঁর দুই দাদা যোগেন ও লক্ষ্মীপ্রসাদকে ডেকে আনেন। কিন্তু উন্মত্ত কুসংস্কারগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ঠেকাতে পারেননি তিন সন্তান।
অন্য দিকে, শোণিতপুরের মিসামারি এলাকার মিলনপুরে, লক্ষ্মী গৌড় নামে এক মহিলাকেও ডাইনি সন্দেহে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষ্মী দেবীর উপরেও চলেছিল অমানুষিক দৈহিক নির্যাতন। বৃহস্পতিবারেই ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে, পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরেছে অনেক পরে। কাল দেহটি মাটি খুঁড়ে তোলা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। |