ওভারব্রিজে সিঁড়ি
ভাঙার যন্ত্রণা অব্যাহত রাঁচি রেল স্টেশনে
ঝাড়খণ্ডের রাজধানী হয়েও রাঁচি রেল স্টেশনে যাত্রী পরিষেবার হাল বছরের পর বছর একই রকম রয়ে গিয়েছে। প্রায় দুই দশক ধরে রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব রয়েছে বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত সাংসদের হাতে। কিন্তু পড়শি রাজ্যের সাংসদরা রেলমন্ত্রী হওয়া সত্বেও তার কোনও সুফল রাঁচির বাসিন্দারা পাননি। রাঁচি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা আজও হয়নি। ফলে দুর্ভোগ অব্যাহত অসুস্থ, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী যাত্রীদের।
রাঁচি স্টেশনে রয়েছে মোট পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতই শুধু সমতল পথে। বাকি প্ল্যাটফর্মগুলিতে যাতায়াতের একমাত্র উপায় প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার একটি ওভারব্রিজ। অসুস্থ, অশক্ত, শিশু, বৃদ্ধ--সকল যাত্রীকেই ২ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাতায়াত করতে হয় ওভারব্রিজের সিঁড়ি ভেঙে। প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ যাত্রীদের কাছে ব্যাপারটা অত্যন্ত কষ্টকর। অথচ, ওই ওভারব্রিজ ছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প পথ নেই। দেশ জুড়ে রেলের আধুনিকীকরণ কর্মযজ্ঞের নানা প্রচার চললেও রাঁচির ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বৈদ্যুতিক চলমান সিঁড়ি (এসক্যালেটর) দূরে থাক, র্যাম্পও (উপরে ওঠা-নামার কংক্রিটের তৈরি ঢালু পথ) নেই রাঁচি স্টেশনে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওভারব্রিজের সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে বয়স্ক ও অশক্তদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। ওভার ব্রিজের সিঁড়ি ভেঙে মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে টাল সামলাতে না-পারায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে মাঝেমধ্যে। ব্রিজের সিঁড়ি ভাঙার ধকল এড়াতে তাই লাইন টপকে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। সেটাও যথেষ্ট ঝুঁকির।
রাঁচি রেল স্টেশনে সাধারণ যাত্রীরা বছরের পর বছর এমন অসুবিধা ভোগ করতে বাধ্য হলেও এ নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির তাপ-উত্তাপ বিশেষ নেই। আর পাঁচটা ঘটনার মতোই এ ক্ষেত্রেও রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিজেপি ঝাড়খণ্ডের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ এনেছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “রাঁচি স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা উন্নত করার জন্য রেল মন্ত্রকের কাছে বহু আবেদন জানানো হয়েছে। ওভারব্রিজের পাশাপাশি শারীরিক ভাবে অক্ষম যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প পথ তৈরির দাবিও জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি রেল।” গোস্বামী জানান, যাত্রীদের যাতায়াতে ওভারব্রিজের বিকল্প পথ তৈরির দাবিতে তাঁরা শীঘ্রই আন্দোলনে নামবেন। প্রয়োজনে রেল অবরোধও হতে পারে।
রেল কী ভাবছে? রেলের রাঁচি ডিভিশনের পদস্থ আধিকারিকেরা জানান, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন রাঁচি ঠিকই। কিন্তু এখানে সমতল পথে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার জায়গা নেই। তাই বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। রেলের তরফে রাঁচির চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার কালীশঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওভারব্রিজের বিকল্প পথ হিসেবে এসক্যালেটর বসানোর পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই। তবে একটি র্যাম্প তৈরির প্রস্তাব অনেক আগেই গৃহীত হয়েছে। তার নির্মাণ কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করার চেষ্টা চলছে। শারীরিকভাবে অশক্ত যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের জন্য আপাতত রয়েছে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। বয়স্ক, অসুস্থ , অশক্ত ও প্রতিবন্ধী যাত্রীরা প্রয়োজনে ওই হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে পারেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.