বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর।
কোথায় উত্তরপ্রদেশে দলের ভাগ্য উজ্জ্বল করার জন্য পুরো উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, একের পর এক রাজ্যে নতুন নতুন বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। কর্নাটকের অশ্লীল ছবি-কাণ্ড সামলে উঠে নরেন্দ্র মোদীকে ভোট প্রচারে ‘রাজি’ করানোর পর এ বারে হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের সঙ্কট মেটানোর দিকে মন দিতে হচ্ছে তাঁকে। উত্তরাখণ্ডে ভোটপর্ব সমাপ্ত। কিন্তু ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারিত রমেশচন্দ্র পোখরিয়াল এখন নতুন চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ভুবনচন্দ্র খান্ডুরি নালিশ জানিয়েছেন, পোখরিয়াল দলবিরোধী কাজ করে ভোটে বিজেপিকে হারাতে ষড়যন্ত্র করেছেন। হিমাচলে আবার এ বছরের শেষে নির্বাচন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধুমলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি মহেশ্বর সিংহ এক দল নেতাকে নিয়ে পৃথক দল গঠন করেছেন।
উত্তরপ্রদেশের ভোটের মধ্যেই এই দুই রাজ্যের সঙ্কট কাটাতে হিমশিম অবস্থা গডকড়ীর। দিল্লিতে এসে তিনি দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। উত্তরাখণ্ডের ভোট যেহেতু হয়ে গিয়েছে, তাই সেখানে একটু ধীরে-চলো নীতি নিয়ে আপাতত হিমাচলে দলের ভাঙন রুখতে ব্যস্ত তিনি। ধুমলের দুর্নীতি ও ‘একনায়কতন্ত্রে’র বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই সরব সে রাজ্যের বিজেপি নেতা শান্তা কুমার। তিনি বারবার গডকড়ীকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এখন দল ভাঙতে থাকায় নড়েচড়ে বসেছেন বিজেপি সভাপতি। দলের নেতা জগৎ প্রকাশ নাড্ডা ও শ্যাম জাজুকে সিমলায় পাঠানো হয়েছে। দলীয় বিধায়ক ও তৃণমূল স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন তাঁরা। তার পরে গডকড়ী ফের বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন, ধুমলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিরিখে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
উত্তরাখণ্ডে পোখরিয়ালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সামনে আসার পর রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে এসেও আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন। গডকড়ী-সহ লালকৃষ্ণ আডবাণী ও অরুণ জেটলির মতো নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। অন্য দিকে খোদ খান্ডুরিও এসে অভিযোগ করেছেন, উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হরিশ রাওয়াতের সঙ্গে তলায় তলায় যোগাযোগ রেখেছেন পোখরিয়াল। যে বিধায়ককে সরিয়ে খান্ডুরিকে এ বারের নির্বাচনে কোটদ্বার কেন্দ্র থেকে লড়ানো হয়েছে, তিনিও বিক্ষুব্ধ হয়ে পোখরিয়ালের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা কবুল করেন, “খান্ডুরির নির্বাচনী কেন্দ্র-সহ রাজ্যের প্রায় ১৫টি কেন্দ্রে পোখরিয়াল দলবিরোধী কাজ করেছেন। খান্ডুরির স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পাল্টা প্রচার চালিয়েছেন। ভোটে ফল যদি ভাল না হয়, তাহলে পোখরিয়ালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে দলকে।” কিন্তু উত্তরপ্রদেশের ভোটপর্বের মধ্যেই কর্নাটক নিয়ে এক প্রস্ত শোরগোল হয়েছে।
দলীয় নেতৃত্ব এই মুহূর্তে কোনও ভাবেই চান না, বাকি দুই রাজ্যের সঙ্কটও মাথা চাড়া দিয়ে উঠুক। গডকড়ীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দুই রাজ্যের নেতাদের নিয়েই আলোচনা হয়েছে। দলের নেতারা সকলের সঙ্গেই কথা বলছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।” |