নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সদ্য তোলা গোলাপ অথবা সতেজ লিলি মিলবে ঘরে বসেই। দার্জিলিং আর তাইল্যান্ডের অর্কিডও পৌঁছে যাবে দোরগোড়ায়। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন্স ডে থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প ও উদ্যানপালন বিভাগের উদ্যোগে শহরে নেমে পড়ছে চারটি বিশেষ ধরনের মোবাইল ভ্যান। ওই দফতরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সল্টলেক থেকে লেক মার্কেট, শ্যামবাজার থেকে গড়িয়াহাট শহর জুড়েই ঘুরবে ভ্যানগুলি। সেগুলির রেফ্রিজারেটরে থাকবে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।’’
সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে খবর, ওই ভ্যানগুলিতে ১৪ তারিখ শুধু ফুল থাকলেও পরে টাটকা শাক-সব্জি ও জৈব সব্জিও বিক্রি হবে। রাজ্যের কৃষি ও বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘ওই ভ্যানে যে শাক-সব্জি থাকবে, তা সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কিনব। তাই এক দিকে ক্রেতারাও যেমন কম দামে সব্জি পাবেন, তেমন চাষিদের হাতেও বেশি টাকা আসবে।’’
মোবাইল ভ্যানের সাহায্যে ফুল বিক্রি কোন দিক থেকে আলাদা? উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘বাগান থেকে ফুল তোলার পরে তা বাজারে আনতে সময় লাগে। সেখান থেকে স্থানীয় বাজারে আনতে আরও সময় লাগে। নতুন ভ্যানগুলিতে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে ফুলকে ১০০ শতাংশ সতেজ রাখা যাবে।” তিনি আরও জানান, এই ভ্যানে গোলাপ থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি অপেক্ষাকৃত দুর্লভ অনেক ফুল পাওয়া যাবে। কোনও ফুল উপহার দিতে চাইলে, তার জন্যও থাকবে বিশেষ ধরনের প্যাকেজিং-এর ব্যবস্থা। |
এমনই ভ্যান ঘুরবে শহর জুড়ে। ছবি: সুদীপ আচার্য |
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে মোবাইল ভ্যানগুলো থেকে গোলাপ কিনলে সেগুলোকে রাংতা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে। গোলাপে প্রাপকের নাম লেখার জন্য স্টিকারও লাগানো থাকবে, জানালেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প ও উদ্যান নিগমের রফতানি বিভাগের আধিকারিক শিবাজি রায়। শিবাজিবাবু বলেন, ‘‘সতেজ গোলাপের কাঁটা ফেলে আকর্ষণীয় প্যাকেজিং-এর মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।’’
প্রতি বছর ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র কয়েক দিন আগে থেকেই গোলাপের দাম অনেক বেড়ে যায়। এক-একটা গোলাপের দাম ১২ থেকে ১৫ টাকা হয়ে যায়। এ বার শীতের অকাল বৃষ্টিতে এমনিতেই ফুলের বেশ ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা। ফলে আশঙ্কা, এ বারও সাধারণ বাজারে গোলাপের দাম থাকবে বেশ চড়া। তবে শিবাজিবাবুর দাবি, “মোবাইল ভ্যানের গোলাপ থাকবে মধ্যবিত্তের নাগালে, ৮ থেকে ১০ টাকার মধ্যে।”
কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের লক্ষ্যই হল চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করা। তাদের হাতে বেশি করে টাকা পৌঁছে দেওয়া। ফড়ে বা দালালরা যেন চাষিদের পরিশ্রমে ভাগ না বসায়, সেটা দেখাই সরকারের উদ্দেশ্য। আমরা যেহেতু সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ফসল কিনব, তাই মোবাইল ভ্যানের সাহায্যে জৈব সব্জি বিক্রি করে চাষিদের স্বার্থটাও দেখতে পারব।’’ |