সরকারি সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)-এর ছোট ভাড়া গাড়ির চালকেরা শ্রম দফতর নির্ধারিত নূন্যতম মজুরি পান না। মেলে না পিএফ, ইএসআই-এর সুবিধাও। এমনই অভিযোগ ডিপিএলের ছোট ভাড়া গাড়ির ৪৫ জন চালকের। পরিস্থিতির পরিবর্তন চেয়ে ডিপিএল কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দরবার করেও কোনও ফল হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
চালকদের পক্ষে মহম্মদ ফারুক হোসেন দাবি করেন, ডিপিএলে তাঁরা ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে গাড়ি চালাচ্ছেন। দৈনিক প্রায় ১০ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে তাঁরা ১৫১ টাকা মজুরি পান। ১২ ঘণ্টা কাজ হলে তা বেড়ে হয় ১৬০ টাকা। তাঁর অভিযোগ, “শ্রম দফতর নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরিও আমরা পাই না। পিএফ, ইএসআই চালুর দাবি আমরা বারবার জানিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা বা ‘প্রিন্সিপ্যাল এমপ্লয়ার’ ডিপিএল, কেউ-ই কোনও পদক্ষেপ করে না।” তাঁর আরও অভিযোগ, “ডিপিএলের মতো একটি সরকারি সংস্থায় বছরের পর বছর বিনা দরপত্রে গাড়ি ভাড়া করা হয়। গাড়ির মালিকদের বারবার বলে কোনও কাজ না হওয়ায় আমরা ডিপিএলের দ্বারস্থ হয়েছি। কারণ, সরকারি নিয়মে ঠিকা কর্মীদের জন্য শ্রম দফতর নির্ধারিত মজুরি দেওয়া এবং পিএফ, ইএসআই অ্যাকাউন্ট চালু করতে ঠিকাদার সংস্থাকে বাধ্য করার কথা ডিপিএলের। তা ছাড়া ঠিকাদার সংস্থার বিল পাশ হওয়ার কথা নয়। অথচ ডিপিএল কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর তা করে আসছেন।”
চালকদের অভিযোগ, তাঁদের অনেকেই ডিপিএলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মী পরিবারের সদস্য। যে সংস্থায় তাঁদের পরিবারের লোকজন চাকরি করেছেন সেখানেই তাঁরা বছরের পর বছর নূন্যতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চালকদের পক্ষে বিশ্বনাথ নন্দী বলেন, “সরকারি হিসাবে ৮ ঘণ্টা কাজ করে ২৭০ টাকা পাওয়ার কথা। সেখানে আমরা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা পাই। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে যদি ডিপিএল কর্তৃপক্ষ টেন্ডার ছাড়া গাড়ি নেওয়া বন্ধ করেন। অবিলম্বে টেন্ডার ডেকে গাড়ি নেওয়া ও চালকদের জন্য নূন্যতম সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।” ডিপিএল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না করলে ২১ ফেব্রুয়ারি গাড়ি না চালিয়ে কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন গাড়ির চালকেরা।
ডিপিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মৃগাঙ্ক মজুমদার অবশ্য ওই চালকদের সমস্যার ব্যাপারে কোনও দায় নিতে চাননি। তিনি বলেন, “আমরা গাড়ি ভাড়া নিই। গাড়ির চালকদের সমস্যা মেটানোর দায় গাড়ির মালিকদের।” কিন্তু ‘প্রিন্সিপ্যাল এমপ্লয়ার’ হিসেবে কি কোনও দায় নেই ডিপিএলের? মৃগাঙ্কবাবুর জবাব, “সামান্য একটি বিষয়কে বড় করে দেখানো হচ্ছে।” অভিযুক্তেরা অধরাই। দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)-র এক আইএনটিটিইউসি কর্মীকে মারধরের ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার আইএনটিটিইউসির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ডিপিএলের এক আইএনটিটিইউসি কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে কিছু লোক তৃণমূল ও আইএনটিটিইউসি-র পতাকা নিয়ে স্টেশন রোড অবরোধ শুরু করে। অবরোধকারীরা এক চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরাও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। সাংবাদিকরা বিষয়টি থানায় অভিযোগ জানান। |