বাম-বিমুখদেরও ব্রিগেডে আসার আহ্বান সূর্যকান্তর
যাঁরা বামফ্রন্টের সঙ্গে কোনও দিন ছিলেন না, ফ্রন্টকে পছন্দ করেন না বা ভোট দেননি, তাঁদেরকেও ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। আগামী রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে শনিবার শ্যামবাজারে এক সভায় দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা তো ব্রিগেড যাবেনই! প্রতি বারই যান। কিন্তু যিনি আমাদের পছন্দ করেন না বা ভোট দেননি, তেমন এক জন করে লোককেও যদি প্রত্যেকে নিয়ে যেতে পারেন, তবেই এই সমাবেশের উদ্দেশ্য সফল হবে।”
ব্রিগেড ভরাতে মূলত কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির শহরাঞ্চলের উপরেই ভরসা করছে সিপিএম। কলকাতা জেলা থেকে দু’লক্ষ মানুষ নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আলিমুদ্দিন। কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল জোট সরকার প্রতি দিনই সাধারণ মানুষের উপর নানা ভাবে আক্রমণ নামাচ্ছে বলে সূর্যবাবুর অভিযোগ। তাঁর মতে, কখনও সেই আক্রমণ মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে, কখনও শারীরিক ভাবে। রাজ্যে বামফ্রন্টের কর্মীরা প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন, নির্বাচনের পরে এ পর্যন্ত ৫০ জন বামপন্থী কর্মী খুন হয়েছেন বলে সূর্যবাবুর অভিযোগ।
এই সূত্র ধরেই সূর্যবাবু বলেন, “আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। কোথাও কংগ্রেস কর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তৃণমূলেরই হাতেই আক্রান্ত হচ্ছেন।” মূলত, এই শ্রেণির মানুষকেই ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়ার আবেদন জানিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “যাঁরা ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়া নিয়ে দোলাচলে আছেন, তাঁদের বলছি, আপনারা লাল ঝান্ডা নিয়ে যাবেন না। মিছিল করেও যেতে হবে না। বামফ্রন্টের কর্মীদের সঙ্গে ঘেঁসাঘেঁসি করেও বসতেও হবে না। কিন্তু আমরা কী বলছি, তা শুনতে আপনারা আসুন।” বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর্মীদের এ কথা বলার নির্দেশও দেন সূর্যবাবু। কর্মীদের তিনি তিনি বলেন, “ব্রিগেড কেবল আমাদের হলে হবে না। সে কারণে যিনি অতীতে আমাদের আক্রমণ করেছেন, ভোট দেননি, তিনি আক্রান্ত হলেও তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। তাঁকে ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে হবে।”
ব্রিগেড সমাবেশ সুশান্ত ঘোষকে হাজির করবে সিপিএম। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময়ে সুশান্ততে ১৮১টি গোলাপ ফুল দেওয়া দিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। বাম-বিরোধীরা তো বটেই অনেক বামপন্থীও এর সমালোচনা করছেন। তা মাথায় রেখেই সূর্যবাবু বলেন, “সুশান্তকে মালা দেওয়া নিয়ে অনেকেই বলছেন, যে দল নিজেদের ত্রুটি সংশোধন করছে, তারা আবার সুশান্তকে মালা দিচ্ছে? মনে রাখবেন, ভুল-ত্রুটি মুক্ত কোনও মানুষ জন্মাতে পারে না। আমরা কিছু ভুল করেছি। তাই দলকে ত্রুটি-মুক্ত করার চেষ্টা করছি। আর সুশান্তকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই জেল থেকে বেরোনার পরে গোলাপ ফুল দেওয়া দেওয়া হয়েছে। দুটোকে গুলিয়ে ফেলা উচিত হবে না।” বিরোধী মানুষকে ব্রিগেডে টেনে আনতে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সাম্প্রতিক বিরোধ, কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভির সঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের বিতর্ক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বৈরতান্ত্রিক বলে মনোজ চক্রবর্তীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা প্রতিটি প্রসঙ্গ টেনে আনেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন, “এই রামধনু জোট বেশি দিন টিকবে না। আকাশে যেমন রামধনু দেখা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে তা মিলিয়ে যায়, তেমনই এই জোটও মিলিয়ে যাবে। থাকবে না।” তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের বিভেদ তৈরি করতে তৎপর সূর্যবাবু আরও বলেন, “তৃণমূল শুধু বিভিন্ন জায়গায় সিটু অফিস বন্ধ করে দিচ্ছে না, আইএনটিইউসি অফিসও জোর করে বন্ধ করে দিচ্ছে। তৃণমূলের নেতারা শুধু সিপিএমের কর্মীদের মারছে না। কংগ্রেসের কর্মীদেরও মারছে।” সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্লাবকে দুই লক্ষ করে টাকা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে সূর্যবাবু বলেন, “সিপিএমের বিধায়করা যেমন কিছু জানতে পারেননি, তেমনই কংগ্রেস বিধায়করাও কিছু জানতে পারেননি। দু’দলের বিধায়কদের এলাকার ক্লাবকেই বঞ্চিত করা হয়েছে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.