প্রিমিয়ার সকার লিগের (পিএলএস) আকাশ শনিবার রাত পর্যন্ত মেঘাচ্ছন্ন। আই এফ এ আবার নতুন করে নিয়ম পাল্টানোর কথা ভাবায় জট খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে ঘোষণা মতো ২৪ মার্চ টুর্নামেন্ট শুরু করা কঠিন।
সোমবার দুপুরে দিল্লিতে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের উদ্যোগ ভবনের অফিসে পিএলএস নিয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে আইএফএ-র জবাবি চিঠি নিয়ে আলোচনা হবে। ফেডারেশন সচিব কুশল দাস এ দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, “কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পরে এ ব্যাপারে যা বলার বলব। তবে সে সব না থাকলে পিএলএস হবে কী ভাবে?”
শনিবার সারাদিন ধরে আইএফএ কর্তারা ব্যস্ত ছিলেন ফেডারেশনের পাঠানো প্রশ্নের উত্তর-সহ কাগজপত্র তৈরির কাজে। জট খোলার রাস্তা খুলতে ফেডারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্তের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয় আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের। সুব্রতবাবু কথা বলেন দিল্লিতে ফেডারেশন সচিবের সঙ্গেও। রাতে সুব্রত বললেন, “মনে হচ্ছে জট খুলে যাবে। আমি আশাবাদী।” ফেডারেশনের সভায় উপস্থিত থাকবেন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে থাকছেন সুব্রতবাবুও। পি এল এসের ব্যাপারটি তাই অনেকটাই নির্ভর করছে সুব্রতবাবুর উপর। |
জট ছাড়াতে ফের নতুন নিয়ম |
• আইএফএ-র তড়িঘড়ি রাস্তা বদল। কলকাতার বদলে এখন ধরা হচ্ছে জেলার ক্লাব বা ক্রীড়া সংস্থাকে।
• বিদেশিদের ছাড়পত্র নিয়ে সমস্যা হওয়ায় তাঁদের ফ্রি প্লেয়ার করার চেষ্টা চলছে।
• এত দিনে সুব্রত দত্তকে গুরুত্ব দিল আইএফএ। প্রফুল্ল পটেলকে বোঝানোর দায়িত্ব এখন সুব্রতবাবুরই।
• অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ভারতে আসছে। এআইএফএফ কোনও মতেই ফিফাকে চটাতে রাজি নয়। |
|
আগে ঠিক ছিল কলকাতা লিগের ছয়টি ক্লাবের নাম পরিবর্তন করে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নামে করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেটি করলে রাজ্য সংস্থার গঠনতন্ত্রের নানা পরিবর্তন ঘটাতে হবে। দু’তিন দিনের মধ্যে তা করা কঠিন। সে জন্য ঠিক হয়, যে টিম যে এলাকার, সেই জেলা সংস্থার কোনও ক্লাবই নেওয়া হবে। অর্থাৎ বারাসত ইউরো মাস্কেটিয়ার্স উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সংস্থার অনুমোদিত হয়ে যাবে। কলকাতায় কোনও জেলা সংস্থা নেই বলে দক্ষিণ কলকাতা জেলা সংস্থাকে ধরা হবে। আইএফএ কর্তাদের দাবি, এতে ফেডারেশনের আর বলার কিছু থাকবে না। আইএফএ-র গঠনতন্ত্র-জনিত সমস্যাও এড়ানো যাবে। কিন্তু জেলার সঙ্গে ফ্রাঞ্চাইজিদের গাঁটছড়া কি সহজে হবে? বর্ধমান এবং হাওড়া জেলার কর্তারা রাজি হয়ে গেলেও বাকিদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে আই এফ এ। জেলাতেও আবার নানা জটিল অবস্থা। সংযুক্তি ঘটালে ভাল টাকা পাওয়া যাবে এই আশায় বিভিন্ন পাড়ার ক্লাব ঝাঁপিয়ে পড়েছে নাম বদল করতে। জেলা কর্তারাও সুযোগ বুঝে নানা রকম দর হাঁকছেন অনুমোদন দিতে। আই এফ এ-র হাতে সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টা। সেই অসহায়তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন জেলার কর্তারা।
পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিতে রবিবার মধ্য কলকাতার এক ক্লাবে সভা ডেকেছে আইএফএ। সেখানে জেলার কর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা। ওই সভা থেকেই পিএলএসের ক্লাবগুলির অনুমোদনের কাগজপত্র নিয়ে দিল্লিতে পাঠিয়ে দিতে। সোমবার ফেডারেশনের সভার আগেই। আইএফএ সচিবও সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন ফেডারেশন সচিবের সঙ্গে কথা বলতে।
১৫ ফেব্রুয়ারি বিদেশি ফুটবলারদের ছাড়পত্র আবেদনের শেষ দিন। তবে সেটা নথিভুক্ত ফুটবলারদের জন্য। অর্থাৎ পার্মা থেকে এরনান ক্রেস্পোকে অন্য ক্লাবে যেতে হলে আবেদন করতে হবে। তবে কানাভারো বা রবি ফাউলারের মতো আইকন ফুটবলাররা এখন মুক্ত ফুটবলার। তাঁদের কোনও ক্লাব নেই। ফলে তাঁরা যে কোনও সময় এসে নথিভুক্ত হতে পারেন পিএলএসের ক্লাবের সঙ্গে। কোনও বাধা নেই। যেটা অন্তত স্বস্তি দিচ্ছে আইএফএ-কে।
পিএলএসের আইনের নানা কচকচিতে অবশ্য নিলামে টিম কেনা ফ্র্যাঞ্চাইজিরা ধাঁধায়। শিলিগুড়ি বেঙ্গল টাস্কার্সের ডিরেক্টর আশিস সরকার বললেন, “সোমবার কী হয় তার অপেক্ষায় আছি। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। ওরা তো বলছে সমস্যা নেই।” হাওড়া ম্যাঞ্চেস্টারের ডিরেক্টর দীপ্তা শর্মার মন্তব্য, “আইন মেনে সব হলে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। আমরা তো লোগো, জার্সি সব তৈরি করে ফেলেছি।” |