ব্রিটিশ আমলে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য তৈরি ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনকে (সিএনটি অ্যাক্ট) ঘিরে পক্ষে ও বিপক্ষে সরব রাজনৈতিক দলগুলির লড়াইয়ে আজও উত্তপ্ত ধানবাদ। শুধু আদিবাসী নয়, সিএনটি অ্যাক্ট সংশোধন করে তফসিল জাতি এবং ওবিসি জনগোষ্ঠীকেও ওই আইনি সুরক্ষা দেওয়ার দাবিতে গত কাল বন্ধ হয়েছে ধানবাদ জেলায়। আজ তারই জবাব দিতে সিএনটি অ্যাক্ট অপরিবর্ত রেখে অবিলম্বে তা কার্যকর করার দাবি নিয়ে ধানবাদের পথে তাদের ‘ট্রাডিশন্যাল’ অস্ত্রশস্ত্র এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে কয়েক হাজার আদিবাসী। |
ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন রূপায়ণের দাবিতে মিছিল। শনিবার ধানবাদে। ছবি: চন্দন পাল |
পুলিশ জানায়, কালের বন্ধের মতোই আজও অচল হয়ে যায় ধানবাদ শহর। আদিবাসী মিছিলের জেরে বন্ধ হয়ে যায় শহরের সড়ক পরিবহণ। সকাল ১০ টা থেকে অবরুদ্ধ হয়ে যায় ধানবাদের প্রাণকেন্দ্র, রণধীর বর্মা চক। বস্তুত সিএনটি অ্যাক্ট নিয়ে এই মুহূর্তে দ্বিধাবিভক্ত বিজেপি নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ডের জোট সরকার। সিএনটি অ্যাক্টের সংশোধন চাইছে ঝাড়খণ্ড সরকারের প্রধান শরিক বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামীর কথায়, “সমাজের সমস্ত শ্রেণির মধ্যে ঐক্য গড়ে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নেওয়াই বিজেপির লক্ষ্য। তাই সিএনটি অ্যাক্টের সংশোধনের দাবি করা হয়েছে। আইনের সুবিধা তফসিল, ওবিসি তালিকাভুক্ত জনজাতি-সহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা গরিব মানুষও পেতে পারে।”
অন্য দিকে, আদালতের নির্দেশিকা অনুযায়ী দ্রুত সিএনটি অ্যাক্ট কার্যকর করার দাবি তুলেছে সরকারের দ্বিতীয় বড় শরিক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ( জেএমএম)। দলের নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপির শ্রেণি চরিত্র সকলেই জানে। জেএমএম সিএনটি অ্যাক্ট কোনও ভাবেই লঘু করতে রাজি নয়।” জেএমএম এই আইনে কোনও রকম সংশোধনের বিরোধী। ওই আইন কার্যকর করতে জেএমএম বদ্ধপরিকর। ইতিমধ্যে আদিবাসী প্রভাবিত অন্য সংগঠনগুলিও সিএনটি অ্যাক্ট চালুর জন্য সরব হয়েছে। বিষয়টি রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, তফশিল উপজাতি-আদিবাসী মানুষের সঙ্গে তফশিল ভুক্ত জাতি ও অনগ্রসর জাতির মানুষদের মধ্যে ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। এই আইনকে ঘিরে ছোটনাগপুর অঞ্চলে জাতি-ভারসাম্যে চিড় ধরছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের আশঙ্কা। |