সেনার গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে কাশ্মীরের বারামুলা জেলার মানুষের বিক্ষোভ আজ দ্বিতীয় দিনে পড়ল। গত কাল গুলিচালনার ঘটনায় যুক্ত সেনা জওয়ানদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। চাপের মুখে পড়ে ঘটনায় নিহত যুবকের পরিবারের কাছে সেনাবাহিনীর তরফে আজই ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। এ দিকে, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ মকবুল বাটের ২৮-তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জে কে এল এফ) যে বন্ধের ডাক দিয়েছিল, তাতে কাশ্মীরের স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। হুরিয়ত কনফারেন্সের দু’টি শাখাই বন্ধকে সমর্থন জানানোয় স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, অফিস, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সবই আজ বন্ধ ছিল।
বারামুলা জেলা গত কাল রাত থেকেই ছিল উত্তপ্ত। রাত ন’টা নাগাদ রফিয়াবাদ এলাকায় গুলিতে আশিক হুসেন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। স্থানীয় মানুষ অভিযোগ তোলেন ওই এলাকায় উপস্থিত সেনা জওয়ানদের গুলিতেই প্রাণ গিয়েছে আশিকের। তার প্রতিবাদে পথে নামেন কয়েকশো মানুষ। সারা রাত ধরেই চলে বিক্ষোভ। বার কয়েক লাঠিচার্জও করে পুলিশ। কিন্তু রাতের সেই বিক্ষোভ থামেনি আজ সকালেও। সোপোর-কূপওয়াড়া সড়ক অবরোধ করেন মানুষ। তাঁদের দাবি, গুলিচালনায় যুক্ত জওয়ানদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এবং ওই এলাকা থেকে সেনা ছাউনি সরিয়ে নিতে হবে। |
রফিয়াবাদে পুলিশের গাড়িতে হামলা। ছবি: এএফপি |
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেন, “এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাই না। কারণ ঘটনাটির নানান ব্যাখ্যা মিলছে।” তবে কোন পরিস্থিতিতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল তা খতিয়ে দেখার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ওমর। এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এ হাসানিন এবং ডিজিপি কুলদীপ খোদাকে নিয়ে আজ নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নাসির আলম ওয়ানি। সেনাবাহিনীর তরফে আসিকের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন হাসানিন। মৃতের পরিবারের এক জনকে চাকরির আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র গত কাল রাতে জানান, এলাকাটিতে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়ে ৩২ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানরা এবং পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। তাতেই এক স্থানীয় যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘন অন্ধকারের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মীদের কাজ করতে খুব অসুবিধা হচ্ছিল বলেও জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র। সোপোর জেলার পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ অহমেদ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সেনার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। |