বিধানসভার মিডিয়া সেন্টার নিয়ে বিতর্ক বাড়ল
বিধানসভার অধিবেশন ছাড়া অন্য সময়ে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করা নিয়ে বিতর্কের মাত্রা বাড়ল।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেছেন, তিনি লিখিত ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে সাংবাদিক বৈঠক শেষ করার জন্য ‘অনুরোধ’ করেছিলেন। কিন্তু সূর্যবাবু তা মানেননি। এ ভাবে তাঁর ‘অনুরোধ’ উপেক্ষা করার জন্যই তিনি সাংবাদিক বৈঠক সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ বিমানবাবু আরও বলেন, “সূর্যবাবুরা আদালতে যেতেই পারেন। আদালতের দরজা সকলের জন্যই খোলা আছে। কিন্তু আমার লিখিত অনুরোধকে যদি কেউ দুর্বলতা মনে করেন, তা হলে আমি তা বরদাস্ত করব না।” স্পিকারের দাবি, বিষয়টি পুরোপুরি তাঁর এক্তিয়ারভুক্ত। তিনি আইন-বহির্ভূত কোনও কাজ করেননি।
সিপিএমের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে স্বৈরতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে সংসদীয় রাজনীতির পরিপন্থী বলা হয়েছে। দলের পলিটব্যুরোর সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি এ দিন কলকাতায় বলেন, “সংসদীয় রাজনীতিতে এ কাজ করা যায় না। কারণ, অধিবেশন ছাড়াও সংসদ বা বিধানসভার মিডিয়া সেন্টার ব্যবহার করার অধিকার সাংসদ ও বিধায়কদের রয়েছে। সাংবাদিকদেরও সংবাদ সংগ্রহের জন্য সব সময়েই বিধানসভায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে। স্পিকার যা করেছেন, তা এই অধিকারের পরিপন্থী।” ইয়েচুরি এ রাজ্য থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ।
তবে, সূর্যবাবু বিষয়টি নিয়ে এ দিন বেশি কিছু বলতে চাননি। বরং তাঁর ধারণা, স্পিকারের সঙ্গে আলোচনার পরে সমস্যার সমাধান হতেও পারে। এ দিন শ্যামবাজারে এক দলীয় সভায় সূর্যবাবু বলেন, “মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলন বন্ধ করার বিষয়টি স্পিকার বিবেচনা করবেন বলে শুনেছি। তাই বেশি বলতে চাই না। সোমবার অফিস (বিধানসভায় বিরোধী নেতার ঘর) খুললে দেখি। স্পিকারের সঙ্গে কথা বলব। তার পরে যা বলার বলব।” তবে যে কোনও বিধায়ক মিডিয়া সেন্টারে যে কোনও বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন বলে সূর্যবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “মিডিয়া সেন্টারে কথা বলার অধিকার সব দলের আছে। এই মিডিয়া সেন্টার বামফ্রন্টের আমলেই তৈরি হয়েছিল। যদিও উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ফিতে কেটেছেন।”
আগে বিধানসভার মধ্যেই স্পিকার, মুখ্যমন্ত্রী-সহ যে কোনও মন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা বা কোনও দলের মুখ্য সচেতক কিংবা কোনও কমিটির সদস্য সাংবাদিক বৈঠক করতে পারতেন। কিন্তু সপ্তম বামফ্রন্টের আমলে একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যম স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের কিছু মন্তব্য তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও সম্প্রচার করে। হালিম তখন তাঁর কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এর পরে হালিম বিধানসভার মধ্যে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সেই সঙ্গে বিধানসভার বাইরে একটি অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টার নির্মাণ করেন। পরে সেই মিডিয়া সেন্টারটি পাকা করা হয়।
এই উদাহরণ তুলে তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, বিমানবাবুর বিরুদ্ধে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ আখ্যা দিলে হালিমের সিদ্ধান্ত কী ছিল? বস্তুত, বিমানবাবুর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্বয়ং হালিম। বর্তমানে তিনি সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য।
সিপিএমের অভিযোগ, বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতেই স্পিকার এ কাজ করেছেন। পাল্টা জবাবে স্পিকার বলেন, “কোথায় সূর্যবাবুর কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে? তাঁর কণ্ঠস্বর তো রোজই শোনা যাচ্ছে! তিনি তাঁর কথা পার্টি অফিস বা অন্য কোথাও নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারেন।” স্পিকার আরও বলেন, সূর্যবাবু যে ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে নিয়মিত সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন, তাতে অন্য দলের সদস্যরা অসুবিধায় পড়ছিলেন। যে দিনের পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার নির্দেশ জারি করেছেন, সে দিন তিনি মাত্র ১৫ মিনিট বেশি সময় নিয়েছিলেন বলে সূর্যবাবুর দাবি। পাল্টা জবাবে স্পিকার বলেন, “১৫ মিনিট নয়। আমার অনুরোধ উপেক্ষা করে তার অনেক বেশি সময় ধরে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.