বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরির ক্ষেত্রে কমতে পারে ন্যূনতম জমির সীমা। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে জমি নিয়ে সমস্যার জেরেই ন্যূনতম জমির পরিমাণ ২৫ একরের চেয়ে কমাতে চায় কেন্দ্র।
জমির কারণেই বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (এসইজেড) তৈরির বিপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকার। সে ক্ষেত্রে জমির নিম্নসীমা কমানোর সিদ্ধান্ত হলে তা অনেকটাই স্বস্তি এনে দেবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। মূলত জৈব প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরির জন্য ন্যূনতম জমির পরিমাণ ২৫ একর। বহু পণ্যের আর্থিক অঞ্চল গড়ার ক্ষেত্রে সেই সীমা ২৫০০ একর। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় থেকেই বর্তমান শাসক দল এসইজেড নিয়ে তাদের নীতি স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই ঘোষিত নীতির কারণেই রাজ্যে ইনফোসিসের প্রকল্পকে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তকমা দেওয়ার সুপারিশ এখনও কেন্দ্রের কাছে পাঠায়নি রাজ্য।
তাই জমির পরিমাণ কম লাগলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্যই কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে। অন্তত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ছড়াতে কেন্দ্রের নীতি বদল হলে অনেক রাজ্যই স্বাগত জানাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত আন্তর্জাতিক বাজারের বেহাল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র আশার আলো দেখতে পারে বলে মনে করছে শিল্পমহল।
শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়। উত্তরপ্রদেশের নয়ডা, হরিয়ানার ঝজ্জর বা মহারাষ্ট্রের রঞ্জনগাঁওয়েও বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে জমির অপব্যবহার নিয়েও। শিল্পায়নের বদলে আবাসন ব্যবসার রমরমা হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে বাম-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। ফলে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরি নিয়ে একাধিকবার রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেই বিতর্কের কেন্দ্রে জমির পরিমাণের প্রসঙ্গই উঠে এসেছে। কেন্দ্রের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের মতানৈক্য ঘটে একাধিকবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে মন্ত্রিসভার বর্ষীয়ান সদস্য প্রণব মুখোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপও করতে হয়।
ইতিমধ্যেই বিশ্ব বাজারের পরিবর্তিত পরিস্থিতির জেরে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল গড়তে লগ্নিকারীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। গত মাসেই লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো, ভিডিওকন-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা তাদের প্রকল্পের জন্য বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তকমা থেকে অব্যাহতি চেয়েছে। এ ছাড়াও ১১টি নির্মাণ সংস্থা বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরি করতে আরও সময় চেয়েছে। কারণ হিসেবে বিশ্ব বাজারের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতিকেই দেখিয়েছে তারাও। সব মিলিয়ে এই আইন পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে নির্মাণ শিল্পমহলও। |