অগ্নিগর্ভ সিরিয়ায় এ বার আততায়ীর হাতে প্রাণ হারালেন এক সেনা-কর্তা। আজ সকালে দামাস্কাসে তিন বন্দুকধারী এক সেনা মেজরকে গুলি করে খুন করে। এই প্রথম বিরোধীদের হাতে সেনাবাহিনীর এক জন মেজর নিহত হলেন। সিরিয়ায় নাগরিকদের উপর সেনার হামলাও অব্যাহত রয়েছে। আজও সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে বাবা আমর এবং আল-খালিদিয়েশ প্রদেশে ২০ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী দামাস্কাসের কাছেও এ দিন ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে সেনা অভিযানে। গত কাল আলেপ্পো শহরে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ২৮ জন নিহত হন। তার ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই অভিযানের তীব্রতা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে সেনা।
গত ১১ মাস ধরে সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে এই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে অন্তত ৭ হাজার সিরিয়াবাসী নিহত হয়েছেন। এ দেশে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে সৌদি আরব নতুন করে একটি প্রস্তাব আনতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জে। সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে। এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়া নিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করা হলেও সেটি পাশ হয়নি। ভারত-সহ ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও চিন এবং রাশিয়া ভেটো দেয়। নতুন সৌদি প্রস্তাবেরও মূল দাবি সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ইস্তফা। তার সঙ্গে এই প্রস্তাবে সিরিয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের এক জন বিশেষ দূত নিয়োগেরও আবেদন জানানো হবে মহাসচিব বান কি মুনের কাছে।
এত দিন বিভিন্ন দেশের তরফে ও আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে প্রেসিডেন্ট বাশারকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধ হয়নি। বরং সরকারের দাবি, ‘সশস্ত্র বাহিনী এবং জঙ্গিদের’ মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার নিরাপত্তা রক্ষী। এই পরিস্থিতিতে সিরিয়া সরকারের কাজকর্ম নিয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড। সম্প্রতি নিরাপত্তার অভাবে এ দেশের মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশে ফিরে ফোর্ড সিরিয়ার হোমস, জাবদানি, রানকুন এবং হলবন শহরে সেনাবাহিনীর বিধ্বংসী হামলার বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে তুলে দিয়েছেন। বিশ্বকে সেখানকার আসল পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতেই তাঁর এই পদক্ষেপ। মিশরে হোসনি মুবারকের বিরুদ্ধে আন্দোলন মাথা চাড়া দেওয়ার পিছনে ফেসবুক, ট্যুইটারের মতো ‘সোশ্যাল নোটওয়ার্কিং’ সাইটগুলির যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বাশার সরকারের বিরুদ্ধে এখনও সে ভাবে অস্ত্র হয়ে ওঠেনি ইন্টারনেট দুনিয়া। এ বার ফোর্ডের পদক্ষেপের ফল কী দাঁড়ায়, সেটাই দেখার।
|