দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে পড়শি রাষ্ট্র ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে জানিয়েছেন মলদ্বীপের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদ হাসান। আর ভারত, মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নাসিদ এবং নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদের কাছে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে আর্জি জানিয়েছে। তবে, একই সঙ্গে নয়াদিল্লি এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনও ভাবেই মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা নাক গলাবে না। দেশের মানুষের স্বার্থেই সমস্যার সমাধান প্রয়োজন। যে দিন দেশে ফিরলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব এম গণপতি, সে দিনই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মলদ্বীপ পৌঁছেছেন মার্কিন বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সচিব রবার্ট ব্লেক। মলদ্বীপের পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন যে উদ্বিগ্ন, সে কথাও মার্কিন বিদেশদফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে, সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য মলদ্বীপের উপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
ভারত সরকারের বিশেষ দূত হিসেবে কালই মলদ্বীপে এসেছেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব এম গণপতি। গত কাল থেকে আজ পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি। আজ বিকেলে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। আমরা চাই মলদ্বীপে দ্রুত শান্তি ফিরুক।” একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পড়শি রাষ্ট্রের অচলাবস্থা কাটাতে ভারত কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। ভারত চায় সব পক্ষই আলোচনায় বসুক। দেশের মানুষের কথা ভেবেই এই আলোচনা প্রয়োজন।” গণপতি জানিয়েছেন, শুধু বর্তমান বা প্রাক্তন প্রেসিডেন্টই নন, দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সকলের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বস্তুত, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ জানিয়েছিলেন, দিল্লি চায় ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটির সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত মিটে যাক। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মতো সে কথাই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানিয়েছেন গণপতি। বৈঠকের পর তিনি বলেছেন ভারতের ভূমিকায় সব পক্ষই খুশি।
ক্ষমতা থেকে সরার আগে নাসিদ কি ভারতের সাহায্য চেয়েছিলেন? গণপতি বলেন, “মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ সমস্যা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মেটাতে হবে। ভারত কখনওই নাক গলাতে চায় না।” তা হলে কি ভারত তার আগের অবস্থান থেকে পিছু হটে নাসিদকে আর সমর্থন করছে না? গণপতির জবাব, “এটা ক্রিকেট ম্যাচ নয়। আমরা সব সময় নাসিদ এবং তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। পাশাপাশি, এ দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতও সরকার ও বিরোধীদের যোগাযোগ রাখছেন।” ভারত কী মলদ্বীপের নয়া প্রেসিডেন্টকে মেনে নিয়েছে? গণপতি বলেন, “ভারত মলদ্বীপের সার্বভৌমত্বকে সব সময়ই স্বীকার করে। এ কথা নাসিদকে জানানো হয়েছে।” আলোচনা যা-ই হোক, প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদ হাসান কিন্তু এখনও তাঁর অবস্থানে অনড়। তিনি আজ জানান, কোনও পরিস্থিতিতেই মলদ্বীপে ভোট এগিয়ে আনা হবে না। |