উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নিত করার প্রস্তাব স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের কাছে পাঠাতে উদ্যোগী হল ব্লক রোগী কল্যাণ সমিতি। আজ, বৃহস্পতিবার ওই প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যাণ্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে পাঠানো হবে। ময়নাগুড়ি ব্লক রোগী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক তথা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ বাগ বলেন, “ময়নাগুড়ির জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ। এ ছাড়াও কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মহকুমা এবং মালবাজার মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ওই গ্রামীণ হাসপাতালের পরে নির্ভরশীল। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পরিকাঠামো জরুরি। উন্নত পরিষেবার জন্য ওই প্রস্তাব নিতে হল।” মঙ্গলবার ব্লক রোগী কল্যাণ সমিতির কর্তারা এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়ে আলোচনায় বসেন। ওই সভায় স্বাস্থ্য আধিকারিকরা গ্রামীণ হাসপাতালের সমস্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালকে দ্রুত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নিত করা না-হলে এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হবে। ২০১০-২০১১ আর্থিক বছরে প্রসূতিদের স্বাভাবিক শিশু প্রসবে ওই গ্রামীণ হাসপাতাল সেরা শিরোপা পেয়েছে। গত শুক্রবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের হাতে মানপত্র তুলে দেন। ওই সময় স্বাস্থ্য আধিকারিক ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নিত করার জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ বার উত্তরবঙ্গ সফরে সময় পেলে গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে পারেন।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রীষ্মকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ জন রোগী ভিড় করে। অন্য ঋতুতে দৈনিক গড়ে ৭০০ রোগী চিকিৎসার জন্য আসে। প্রতিদিন গড়ে ৮০ জন ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের শয্যা মিলছে না। গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামোতে বর্তমানে শয্যা রয়েছে ৬০টি। আরও২০টি শয্যার জন্য ঘর তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চালু হয়নি। নেই স্ত্রী, শিশু, অস্থির মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বাধ্য হয়ে দিনে গড়ে ৭ জন রোগী বাইরে রেফার করতে হচ্ছে। টেকনিশিয়ান না-থাকায় ইসিজি করানো সম্ভব হচ্ছে না। অ্যানেস্থেশিয়া মেশিন পড়ে আছে। পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা রয়েছে। এমনকী যে চিকিৎসকরা রয়েছেন তাঁদেরও প্রত্যেকের হাসপাতাল চত্বরে থাকার ব্যবস্থা নেই। ব্লক রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী বলেন, “স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হলে শয্যা সংখ্যা বেড়ে ১২০ হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া যাবে। উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।” |