চিকিৎসায় গাফিলতি, অভিযোগের পাহাড়
হরমপুরের মাতৃসদনে ডোমকলের শামিমা আখতারের মৃত্যু কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। চিকিৎসায় গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যুর অজস্র অভিযোগ রয়েছে। কখনও লিখিত আকারে অভিযোগ জমা পড়লে তা নিয়ে কিছু দিন হইচই হয়। তারপর ক্রমে তা থিতিয়ে যেতেই মাতৃসদনও আগের জায়গায় ফিরে যায়। অতীতের কোনও ঘটনা থেকেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর শিক্ষা নেয় না বলে অভিযোগ। ফলে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী থেকে আয়া, দালালচক্র সবই রয়ে গিয়েছে গতানুগতিক।
জেলা সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ মাতৃসদনে বছর খানেক আগে মুর্শিদাবাদ থানার ডাহাপাড়া পঞ্চায়েতের বুধড়া গ্রামের বাসিন্দা মধুমিতা রায় (৩০) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে তাঁর কন্যা সন্তান প্রসব হয়। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসকষ্ট জনিত কারণকেই দায়ি করেছিল। ওই ঘটনায় চিকিৎসক-নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। নিয়মমাফিক তদন্তও হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। একই ভাবে আয়ার গাফিলতিতে হাসপাতালের বিছানা থেকে পড়ে মারা যান দৌলতাবাদের এক প্রসূতি। আয়া-রাজ অবশ্য চলছেই।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (হাসপাতাল, প্রশাসন) বিশ্বরঞ্জন শতপথী এই হাসপাতাল সম্পর্কে স্পষ্টই জানিয়েছেন, “মাতৃসদনে রোগী থাকার মত অবস্থা নেই। ওই হাসপাতালে কোনও রোগী ভর্তি হলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
দোতলা ওই মাতৃসদনে প্রসূতি বিভাগের দু’টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতি বছর মাতৃসদনে ১৭-১৮ হাজার শিশুর জন্ম হয়। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ‘রেফারড্’ হয়ে আসার ফলে মাতৃসদনে রোগীর চাপ থাকে। কর্তব্যরত নার্স বলতে দুটি ওয়ার্ডে তিন জন করে ৬ জন। আর চিকিৎসক রয়েছেন সর্বসাকুল্যে ৬ জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, “ওই ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৪ জন যদি সপ্তাহে ১৫০ জন রোগীর অস্ত্রোপচার করেন, তাহলে বাকি ২ জন চিকিৎসক ১৫০ জন করে ৩০০ জন রোগীর অস্ত্রোপচার করে থাকেন। যদিও জননী সুরক্ষা যোজনা আওতায় বিনা খরচে হাসপাতালে সন্তান প্রসবের কথা বলা হলেও কার্যত তা হয় না।” সরকারি ওষুধ সরবরাহ সত্ত্বেও বিভিন্ন আধুনিক ওষুধ প্রয়োগ করার প্রবণতা রয়েছে কিছু চিকিৎসকের মধ্যে। তার বিনিময়ে অবশ্য তাঁরা বাড়তি কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারেন বলে অভিযোগ। এ জন্য তাঁদের চার পাশে এক শ্রেণির দালাল সর্বক্ষণ ঘুরঘুর করে। অভিযোগ, ওই ওষুধগুলোর দাম বেশি। অস্ত্রোপচারের পরে প্রসূতির বাড়ির লোকজনের অধিকাংশেরই ওই ওষুধ কেনার ক্ষমতা থাকে না।
অন্য এক সরকারি চিকিৎসকের দাবি, “সিজার করার প্রয়োজন নেই এমন অনেক প্রসূতিকেও জোর করে সিজার করা হচ্ছে, শুধুমাত্র বাড়তি মুনাফা লাভের জন্য। মাতৃসদনের আশপাশের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে সঙ্গে ওই চিকিৎসকদের আঁতাত রয়েছে। ওষুধ বিক্রির পরে তাঁরা চিকিৎসকের বাড়িতে কমিশনের অর্থ পৌঁছে দেয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.