|
|
|
|
শিশুমৃত্যু, ধুন্ধুমার বাঁকুড়া মেডিক্যালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঁকুড়া |
এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বুধবার বিকেলের ঘটনা। খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের সুপারের ঘরের ভিতরে টেনে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “সাংবাদিক ও জুনিয়র ডাক্তাররা পরস্পরে বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ করেছেন। তদন্ত চলছে।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে হাসপাতালে ভর্তি থাকা তিন দিনের একটি কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতিতে ওই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মা রফিকা বিবির অভিযোগ, “হাসাপাতালে বেড পাওয়া যায়নি। সদ্যোজাত মেয়েকে শৌচাগারের সামনে মেঝের উপরে শুইয়ে রাখতে হয়েছিল। কষ্টে সে ছটফট করছিল। চিকিৎসকদের ডেকেও সাড়া পাইনি। চোখের সামনে মেয়েটা মারা গেল।” দুপুরে শিশুটির পরিবারের লোকেদের সঙ্গে হাসপাতাল সুপারের অফিসের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের বচসা বাধে। ঘটনার কথা জানতে পেরে সেখানে হাজির হন কয়েকটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সাংবাদিকরা। তাঁরা ক্যামেরা বের করতেই মারমুখী জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। মারতে মারতে সুপারের ঘরের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। মিলন কর্মকার, বুধন কর্মকার, মধুসূদন গড়াই ও অমিতাভ দাস নামের ওই সাংবাদিকদের অভিযোগ, “সুপারের ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। বাইরে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা ছিলেন। ঘরের ভিতর সুপারের সামনে আমাদের মারধর করা হলেও তিনি চুপ করেছিলেন। কোনওক্রমে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। তা নাহলে ওরা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলত।” এক সাংবাদিকদের চোখে ও মুখে আঘাত লেগেছে। বাকি তিনজনও আহত হয়েছেন। জামা ছিঁড়ে গিয়েছে। এক মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, এক জুনিয়র ডাক্তার তাঁর হাতে সূঁচ ফুঁকিয়ে দেয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে অন্যান্য রোগীর আত্মীয়েরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। জুনিয়র ডাক্তার-সহ সুপারকে ওই অফিস ঘরের ভিতরে ঘণ্টা দু’য়েক তাঁরা আটকে রাখেন। খবর পেয়ে বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রজা। নিগৃহীত সাংবাদিক ও রোগীর আত্মীয়রা দাবি জানান, অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের গ্রেফতার করতে হবে। ওই চার সাংবাদিক অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পরে পুলিশ পাহারায় অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের হোস্টেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেই সময় অভিযুক্তদের কয়েক জন উল্লাস প্রকাশ করেন। যা দেখে রোগীর আত্মীয়দের প্রশ্ন, “এরা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবে?” হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “দু’পক্ষই ঘটনার জন্য দায়ি। জুনিয়র ডাক্তাররা উত্তেজিত হয়েছিলেন। সাংবাদিকরাও কুটূক্তি করেছিলেন। মারপিটের সময় ওদের বার বার শান্ত হতে বলেছিলাম। কেউ কথা শোনেননি।” শিশুটির চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। |
|
|
|
|
|