নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
দেড় বছরেও শেষ হয়নি জলপাইগুড়ি জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মী নিয়োগের দুটি পরীক্ষায় অনিয়মের তদন্ত। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফের ওই পরীক্ষার খাতা খতিয়ে দেখা হয়েছে। অনিয়মের ঘটনা নতুন করে সামনে উঠে আসায় দেরিতে হলেও ওই পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “ওই পরীক্ষা নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।” ২০১০ সালের মার্চ এবং সেপ্টেম্বর মাসে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পরিচালনায় জেলায় পঞ্চায়েত কর্মী পদে নিয়োগের দুটি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার দিন মোটা টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। সেই সঙ্গে পরীক্ষার দিন বিভিন্ন কেন্দ্রেও অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়ে। টাকার বিনিয়মে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জেলার দু’জন পদস্থ আধিকারিকের নাম জড়িয়ে যায়। অভিযোগ পৌঁছয় মহাকরণেও। ওই সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তের কাজ ধীরগতিতে এগোতে থাকে। সম্প্রতি ফের পরীক্ষার খাতা খতিয়ে দেখা যায় পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্রে বসানো নম্বরের সঙ্গে চূড়ান্ত নম্বর তালিকা তথা ‘ট্যাবুলেশন সিটের’ নম্বরের মধ্যে মিল নেই। উত্তরপত্রের প্রাপ্ত নম্বর চূড়ান্ত তালিকায় না তুলে পছন্দের প্রার্থীদের ইচ্ছেমতো নম্বর বাড়িয়ে মূল তালিকায় রাখা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কোনও ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়। ধীরগতিতে তদন্ত চালিয়ে অনিয়মের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত সহায়কের পরীক্ষায় একের পর এক অভিযোগ ওঠার পরে নিয়োগ কমিটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আগে নিয়োগপত্র বিলির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ওই পরীক্ষায় জেরক্স করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ায় প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একই ভাবে পঞ্চায়েত কর্মী পদের ক্ষেত্রে তদন্তের সময় বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় থেকে ওই অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না বলে নির্দেশ দেওয়ার পরে ফের নতুন করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুটি পরীক্ষা জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পরিচালনায় হয়েছিল। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক রঞ্জন ঝাঁ সম্প্রতি অন্য জেলায় বদলি হয়েছেন। বুধবার তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কোন পরীক্ষার কথা বলা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। সব দায়িত্ব বুঝিয়ে এসেছি। এখন আর কী বলব।” |