|
|
|
|
ব্রাত্যর সঙ্গে বৈঠক |
শিক্ষায় হিংসা রুখতে রাজ্য নিরপেক্ষ নয়, বাম নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলেজে কলেজে অধ্যক্ষ-শিক্ষক নিগ্রহ-সহ নানা ধরনের হিংসাত্মক ঘটনায় রাজ্য সরকার ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ তুলল বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করে এই মর্মে অভিযোগ জানান চারটি বাম ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বাম ছাত্রদের অভিযোগ, তৃণমূল বা কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন কলেজে হামলা করলে পুলিশ-প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ বাম ছাত্রদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটাকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। এই ‘প্রহসন’ বন্ধের দাবি জানিয়ে মন্ত্রীকে এ দিন একটি স্মারকলিপিও দিয়েছে প্রতিনিধিদলটি। নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে কলেজে হামলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ছাত্র-প্রতিনিধি যুক্ত করা ইত্যাদি দাবিও জানান প্রতিনিধিরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র বলেন, “অনেক জায়গায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ গায়ের জোরে কলেজ দখল করছে। তারা আমাদের নির্বাচনে যোগ দিতেই দিচ্ছে না। মন্ত্রীকে সব জানালাম। দেখি, কী হয়। প্রয়োজনে আমরা দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্যপালের কাছেও যেতে পারি।” ব্রাত্যবাবু জানিয়েছেন, বামপন্থী ছাত্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর ‘সদর্থক’ আলোচনা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে যে-দিন বাম ছাত্র প্রতিনিধিরা মন্ত্রীর কাছে দরবার করছেন, সে-দিনই কলকাতা হাইকোর্টে মাজদিয়া কলেজের ৩ এসএফআই-সমর্থক ছাত্রের জামিনের আবেদনের শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। মামলাটি বুধবার বিচারপতি কাঞ্চন চক্রবর্তীর এজলাসে শুনানির জন্য উঠেছিল। কিন্তু সরকার পক্ষের কিছু অসুবিধা থাকায় শুনানি করা যায়নি। স্থির হয়, আজ, বৃহস্পতিবার শুনানি হবে। নিম্ন আদালত ওই ছাত্রদের জামিন মঞ্জুর করেনি।
সম্প্রতি রাজ্যের বেশ কয়েকটি কলেজে অধ্যক্ষ-নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। কোথাও নিজের কলেজের ছাত্রদের হাতে, আবার কোথাও বহিরাগতদের হাতে নিগৃহীত হতে হয় অধ্যক্ষদের। রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট কলেজ-সহ অন্য সব ক্ষেত্রেই পুলিশ আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দিয়েছে। কিন্তু মাজদিয়ার ক্ষেত্রে ধৃত এসএফআই-সমর্থকদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরপর তিন দফায় ১৪ দিন করে ধৃতদের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁরা হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করেন।
কলেজে হিংসার মূলে আছে ছাত্রভোট। এবং সেই গোলমাল চলছেই। এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সভায় মারপিটে জড়িয়ে পড়ে শাসক দল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-রই দু’টি গোষ্ঠী। কলকাতা থেকে যাওয়া তৃণমূলের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষক অম্লান মণ্ডল-সহ চার জন অল্পবিস্তর জখম হন। পরে সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব না-দিয়ে জানান, সংগঠনের তরফে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ওই সভাতেই সাত জনের কমিটি গড়া হয়েছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা। |
|
|
|
|
|