মানুষ মুখ ফেরাল, মারা গেলেন প্রৌঢ় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
শহরের অবহেলার শিকার হলেন এক প্রৌঢ়।
সোমবার বেলা এগারোটা নাগাদ অনাথ পাল (৫২) নামে বহরমপুর লাগোয়া সারগাছি-মহিষাস্থলী গ্রামের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় স্বর্ণময়ী বাজারের কাছে স্টেশন রোডের রাস্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যান।
ট্রাক্টরের ধাক্কায় জখম হয়ে তিনি ঘণ্টা খানেক রাস্তাতেই পড়ে থাকেন। তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া যায়নি। বাজারের কাছাকাছি স্থানীয় এক রেঁস্তোরার মালিক সুশান্ত দাস অবশ্য একা হাতে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি জানান, কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। বহরমপুর থানার পুলিশ এসে ওই প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির বন্দোবস্ত করে।
কিন্তু বাজারের উল্টো দিকেই হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও রাস্তার উপরে বিনা চিকিৎসায় ঘন্টা খানেক পড়ে থাকায় বিস্মিত হন বহরমপুরের নাগরিক সমাজ।
হাসপাতালের শল্য বিশেষজ্ঞ সমীর রায় বলেন, “আচমকা পড়ে গিয়ে ওই রোগী মাথায় বড় ধরনের চোট লাগে। সেই সঙ্গে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর কাছে গভীর ক্ষত ছিল। ওই ক্ষত দিয়ে রক্তপাতও হচ্ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময়ে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। কোনও মতে তিনি নিজের নাম ও ঠিকানা বলতে পারেন। পরে তাঁর হাঁটুতে ছোট একটা অস্ত্রোপচারও করতে হয়।”
সমীরবাবু বলেন, “ওই রোগীর মাথার চোট গুরুতর কি না, তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু চিকিৎসার সেই সুযোগটুকুও পাওয়া গেল না। প্রয়োজনে রোগীর বাড়ির লোকজন কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি।” সুশান্তবাবু বলেন, “অনাথবাবুর পরিবারের লোকজন সোমবারই আমার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের কাছ থেকেই জানতে পারিওই দিন দু’জন আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে তিনি বহরমপুরে এসেছিলেন ডাক্তার দেখানোর জন্য। তার পরে অনাথবাবু একা হেঁটে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে।” |