মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদের অচলাবস্থা কাটাতে আলোচনায় বসতে চাইছেন কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা। তবে আলোচনা শুরুর পথে বাধাও হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তারাই।
এক নজরে
জেলা পরিষদ |
মোট সদস্য- ৬৩
বাম-৩১, কংগ্রেস-২৮, শূন্যপদ-৪
সংখ্যাগরিষ্ঠ বামেরা |
পদাধিকারী সদস্য-১০৯
বিধায়ক-২২
বাম-৭, কংগ্রেস-১৩, মন্ত্রী-২
সাংসদ-৫
বাম-১, কংগ্রেস-৩, মন্ত্রী-১
পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি-২৬
বাম-১২, কংগ্রেস-১৪ |
সাধারণ সভায় ভোট দিতে পারেন
১০৯ পদাধিকারী সদস্য।
মন্ত্রীর
ভোটাধিকার নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস। |
৬৩ সদস্যের জেলা পরিষদে বাম সদস্য ৩১, কংগ্রেসের ২৮। অন্য দিকে সাধারণ সদস্যের হিসেবে সদস্য সংখ্যা ১০৯। কারণ পদাধিকারি সদস্য হিসেবে বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ভোটাধিকার রয়েছে সাধারণ সভায়। ফলে সেখানে কংগ্রেস সদস্য ৫৮ আর বামেদের ৫১। স্বভাবতই ২০১১-১২ অর্থ বছরের বাজেট পাশ করাতে পারেনি বামফ্রন্ট নিয়ন্ত্রিত জেলা পরিষদ। আর তার ফলেই স্থবির জেলা পরিষদ। এমতাবস্থায় আর্থিক দায়িত্ব পালনে জেলা শাসককে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে কাজ চালাতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু জেলা শাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বদলি হওয়ায় ও তার বিকল্প না আসায় সমস্যা বেড়েছে। জেলা পরিষদের সচিব ভরত বিশ্বাসও অবসর নিয়েছেন। জেলা পরিষদের একজিকিউটিভ আধিকারিক হিসেবে যিনি অতিরিক্ত জেলা শাসকের কাজ করছিলেন তিনিও বদলি হয়েছেন। ফলে জেলা পরিষদ এখন সত্যিই অচল। কংগ্রেসের রাজ্য পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব বলেন, “জেলা পরিষদে শাসক দল হিসেবে গরিষ্ঠ সিপিএম-সহ বামফ্রন্ট। তাই আলোচনা করতে এগিয়ে আসতে হবে তাঁদেরই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলা পরিষদের অচলাবস্থা কাটাতে আলোচনার প্রস্তাব দেননি বামেরা। ফলে প্রশাসনিক জটিলতার জন্য দায়ি বাম নেতারাই।” অন্যদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “জেলা পরিষদের এই অচলাবস্থা জেলার উন্নয়নকে ব্যহত করছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বাজেট সভায় বিরোধী পক্ষকে সহযোগিতা করে চলতে হয়। বামফ্রন্ট থেকে কংগ্রেসের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয় আলোচনার জন্য। কিন্তু তাঁরা কোনও আগ্রহ দেখাননি। জেলা পরিষদের অচলাবস্থার দায় তো নিতেই হবে কংগ্রেসকে।” জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক অজয়কুমার ঘোষ বলেন, “কবে নতুন জেলা শাসক আসবেন জানিনা। কাজকর্মে তো ব্যাঘাত ঘটবেই।” তবে উন্নয়ন বন্ধ হয়ে গিয়েছে একথা মানতে রাজি নন জেলা পরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাস। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক জটিলতার কারণে কিছু সমস্যা হলেও ইন্দিরা আবাস যোজনা থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম-সড়ক যোজনা সবেরই কাজ চলছে। রাজ্য সরকার আইনানুযায়ী জেলা পরিষদ ভেঙে দিতে পারেনা। এদিকে প্রস্তাব দেওয়া সত্বেও আলোচনায় না বসে কংগ্রেস জেলা পরিষদের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে নষ্ট করে দিতে চাইছে।” তবে সভাধিপতির ওই দাবি মানতে চাননি সহকারি সভাধিপতি আরএসপির সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “কাজ যা চলছে তা সবই আগের। বাজেট না হওয়ায় কয়েক করোটি টাকা পড়ে রয়েছে অথচ কাজ করা যাচ্ছে না।” জেলা পরিষদের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “জেলা পরিষদ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বলে রটিয়ে সিপিএম মানুষের সহানুভুতি আদায়ের চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকার কোনও গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সংস্থাকে ভাঙার পক্ষপাতি নয়। বহু সরকারি পদ খালি পড়ে রয়েছে জেলায়। সেগুলো পূরণ করে প্রশাসনিক উন্নয়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।” |