নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সহায়কমূল্যে সরকারি ভাবে ধান কেনা নিয়ে গড়িমসি চলছেই। ফলে খোলাবাজারেও ধানের দাম বাড়েনি। চাষিরা সহায়কমূল্য তো পাচ্ছেনই না, উল্টে ফড়েদের কাছে অভাবী বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেই অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘লেভি’ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পূরণ হয়েছে এখনও পর্যন্ত। বিরোধীদের লাগাতার অভিযোগের মুখে ফের আজ, বৃবস্পতিবার জেলায় আসছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি ধান কেনার তিনটি শিবিরেও উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সরকার লেভি-র লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ২ লক্ষ ৯ হাজার টন। রাজ্য সরকার সরাসরি ধান কেনার পাশাপাশি বেনফেড, কনফেড, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি), এনসিসিএফ এবং এফসিআইয়ের মাধ্যমে ওই লেভি-সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে রাজ্য সরকার সরাসরি ৫০ হাজার টন লেভি অর্থাৎ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৭ হাজার ৪১৯ টন লেভি সংগ্রহ করেছে।
বেনফেডের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার টন। তারা এখনও চাল সংগ্রহেই নামেনি। ইসিএসসি তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৭০ হাজার টনের মধ্যে মাত্র ৯ হাজার ৪৮৪ টন লেভি সংগ্রহ করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই লেভি সংগ্রহের হার করুণ!
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক কুইন্টাল ধান থেকে ৬৮ কেজি চাল পাওয়া যায় বলে সরকারি হিসাবে ধরা হয়। অর্থাৎ ২ লক্ষ ৯ হাজার টন চাল সংগ্রহের জন্য এর থেকে অনেক বেশি ধান কিনতে হবে। যা কেনা হলে চাষিদের আর অভাবী বিক্রির পথে হাঁটতে হয় না। সরকারি নিয়মে চাষিদের কাছ থেকে বিভিন্ন চালকল, সমবায় সমিতি ধান কেনে। চালকলে চাল তৈরির পর সেখান থেকে লেভি সংগ্রহ করে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা। এক দিকে চালকলগুলির ধান কেনায় অনীহা এবং অন্য দিকে লেভি সংগ্রহে দেরি— এই দুই-ই চলছে। এর ফলে, সরকার কুইন্টাল প্রতি যেখানে ১০৮০ টাকা ধানের সহায়কমূল্য নির্ধারণ করেছে, খোলাবাজারে সাড়ে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা কুইন্টাল দরে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা।
বিভিন্ন জেলায় চাষির আত্মহত্যা নিয়ে বিরোধীদের শোরগোলের পরিণতিতে বেকায়দায় পড়েছে সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো ‘পিছিয়ে পড়া’ এলাকায় যাতে ধান কেনায় গতি আনা যায় সে জন্যই ফের জেলায় আসছেন মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের কেরানিচটি, চাঁদড়া ও শালবনির পিরাকাটা এলাকায় শিবির করে ধান কেনায় উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী। |