বৈঠকটি ছিল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে। বিলের কিছু ধারায় আপত্তি রয়েছে দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ও খাদ্য মন্ত্রীদের বৈঠকে ‘কৌশলগত ভাবে অনুপস্থিত’ রইলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং খাদ্য ও সরবরাহমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে আজ সংশ্লিষ্ট দফতরের আমলারাই ওই বিলটি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন আপত্তির কথা কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরেন।
খাদ্য সুরক্ষা বিলের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি রয়েছে খোদ মমতার। ওই বিল নিয়ে আলোচনা চলাকালীন তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের আপত্তির কথা কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানিয়েও দিয়েছে। তবে সে ব্যাপারে এখনও কোনও পদক্ষেপ করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়নি কেন্দ্রীয় কৃষি বা খাদ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও ইতিবাচক বার্তা না পাওয়ায় আজকের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্ট দফতরের দুই মন্ত্রী। এর আগে দলীয় নীতির বাইরে গিয়ে লোকপাল বিলের সমর্থনে ভোট দেওয়ায় লোকসভার সাংসদদের উপর চটে গিয়েছিলেন মমতা। তৃণমূল সূত্র বলছে, যেখানে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি রয়েছে, সেখানে ওই বৈঠক এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করেছেন দুই মন্ত্রী।
আজকের বৈঠকে রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে খাদ্য সুরক্ষা না দিতে পারলে যে আর্থিক ক্ষতি রাজ্যের বহন করার কথা সেই টাকা দিক কেন্দ্র। কেননা এই আইন পাশ হলে রাজ্যবাসীকে খাদ্য সুরক্ষা দিতে বাধ্য থাকবে প্রতিটি রাজ্য সরকার। এবং কোনও ব্যক্তি অভুক্ত থাকলে সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে প্রতিদিনের হিসাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে। রাজ্যের দাবি, সেই আর্থিক দায়ভার বহন করুক কেন্দ্র। এ ছাড়া বিপিএল ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণের জন্য যোজনা কমিশনের নীতি নিয়েও ফের এক প্রস্ত আপত্তি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দেখা গিয়েছে, যোজনা কমিশন ও রাজ্য সরকারগুলির কাছে যে আলাদা আলাদা বিপিএল তালিকা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। যা নিয়ে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিহার, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যও দীর্ঘ দিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। আজও রাজ্যের পক্ষ থেকে ওই ফারাক মিটিয়ে তার পরে আইন কার্যকর করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্যশস্য সংগ্রহে পশ্চিমবঙ্গ সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলে রাজ্যের প্রতিনিধিরা দাবি করলেও খাদ্য মন্ত্রক কিন্তু জানিয়েছে, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলির আরও খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার ক্ষমতা রয়েছে। |