সুপ্রিম কোর্টের টু-জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা উচিত কি না, সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। শুধু তা-ই নয়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর দফতরের কারওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না, অ্যাটর্নি জেনারেল গুলাম বাহনবতীর কাছে তা-ও জানতে চেয়েছেন মনমোহন।
টেলিকম মন্ত্রী পদে এ রাজার জমানায় টাটা টেলিকম, ইউনিনর, আইডিয়া-র মতো নয়টি সংস্থার মধ্যে যে ১২২টি টু-জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স বণ্টন করা হয়েছিল, গত সপ্তাহে তা বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জনতা পার্টির সভাপতি সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর জনস্বার্থের মামলায় শীর্ষ আদালত মন্তব্য করেছিল, ‘একতরফা’ এবং ‘সংবিধান-বহির্ভূত’ উপায়ে টু-জি লাইসেন্স বণ্টন করা হয়েছিল। ৩১ জানুয়ারির ওই রায়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরেরও সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। এ রাজার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিতে কেন ১৬ মাস সময় লেগেছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের মত হল, “প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন এবং পরে তিনি অজুহাত দেন যে সিবিআই মামলা দায়ের করেছে, তদন্ত চলছে।” আদালতের এই মতের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন কি না, তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আদালত জানিয়েছে, সরকারি পদস্থ কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে চার মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া উচিত কি না, সরকার তা ভেবে দেখুক। কেন্দ্রীয় সরকার তথা কংগ্রেসের একটা বড় অংশের মত হল, স্পেকট্রাম লাইসেন্স বণ্টনের ক্ষেত্রে নীতিতে কোনও ভুল ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট স্পেকট্রাম নিলামের নির্দেশ দেওয়ায় ভবিষ্যতের নীতিতে স্বচ্ছতা এসেছে। কিন্তু আদালত অনেক ক্ষেত্রে নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে মত দিয়েছে। এমনকী স্পেকট্রাম নিলামের ক্ষেত্রে কত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তা-ও সুপ্রিম কোর্টে ঠিক করে দিয়েছে। এই জন্যই আদালতের রায়ের পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে সরকার ও কংগ্রেসের বড় অংশের মত।
আজ সেই বিষয়েই আইনি পরামর্শ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অ্যাটর্নি জেনারলকে এক মাসের মধ্যে মত জানাতে বলা হয়েছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেন, “আমরা এই বিষয়ে সরকারের পাশে রয়েছি।” |