ইন্দিরা আবাস যোজনায় ১ কোটি টাকার বেশি নয়ছয়ের অপরাধে রাজ্যের ছয় বিডিও-কে চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিল নীতীশ সরকার। রাজ্যের দুই আইএএস অফিসারের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বিহার সরকার। সরকারি এক অফিসারের কথায়, এর আগে এক সঙ্গে এতজন অফিসারের বিরুদ্ধে এরকম কোনও শাস্তির নজির নেই। অনেকেই মনে করছেন, সে ক্ষেত্রে নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে অন্য একটি বার্তা পৌঁছে দিলেন নীতীশ কুমার।
২০০৪-০৫ সালে আরারিয়া জেলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্প, ইন্দিরা আবাস যোজনায় এক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল বলে রাজ্য সরকার জানতে পারে। এরপরেই নীতীশ সরকার এই নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তাতেই উঠে আসে মোট আট জন বিডিও ও দুই আইএএস অফিসারের নাম। সমস্ত ঘটনা তদন্ত করার পর সরকারি সিদ্ধান্ত: দুর্নীতির কারণে গয়ানন্দ যাদব, সুরেন্দ্র রায়, অশোক কুমার তিওয়ারি, মহম্মদ পারভেজ্জুলা, মহম্মদ শামিম আখতার এবং রমেশ ঝা নামে ছয় বিডিও-কে বরখাস্ত করা হবে। আগেই যে দু’জনকে বরখাস্ত করা হয় তাঁরা হলেন, রাম নিরঞ্জন চৌধুরি এবং রাজেশ কুমার গুপ্ত। রাজেশবাবু হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে আপাতত কাজ করে যাচ্ছেন।
তদন্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সরকার মনে করছে, তৎকালীন সহকারি উন্নয়ন অধিকর্তা বাল্মিকী প্রসাদ এবং তৎকালীন জেলাশাসক অমরেন্দ্র নারায়ণ সিংহ, এই দুই আইএএস অফিসারও দুর্নীতিতে যুক্ত। তাঁদের মাধ্যমে এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়েছিল। এই দু’জনের বিরুদ্ধে আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে সরকার। প্রশাসনিক দফতরের প্রধান সচিব দীপক কুমার বলেন, “রাজ্য সরকার ছ’জন বিডিও-কে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইন্দিরা আবাস যোজনার প্রায় ১ কোটি টাকার গরমিলের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।”
নীতীশ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৭৫ জন সরকারি কর্মী-অফিসারকে দুর্নীতির অপরাধে চাকরি থেকে সাসপেন্ড কিংবা বরখাস্ত করেছে। কয়েকদিন আগে নীতীশ কুমার ভাগলপুর জেলায় সেবা যাত্রায় গিয়ে সেখানকার এক বিডিও ও পঞ্চায়েত অফিসারের দুর্নীতি এবং খারাপ ব্যবহারের জন্য আম-জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেখানেই ওই দুই অফিসারকে সাসপেন্ড করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির অসঙ্গতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে সেখানে স্কুল খোলা হবে। ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করে রাজ্য সরকার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি স্কুলও গড়ে তুলেছে। তবে এক সঙ্গে এতজন অফিসারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রায় বিরল। |