নিজস্ব সংবাদদাতা • সালানপুর |
মুক্তাইচণ্ডী আনন্দমেলা শুরু হল মঙ্গলবার। এ বার আটচল্লিশ বছরে পড়ল এই মেলা।
সাতচল্লিশ বছর আগে ১৯৬৪ সালের মাঘী পূর্ণিমার দিন কীর্তনের আয়োজন করে মেলার সূচনা করেছিলেন অসীমানন্দ সরস্বতীর শিষ্য সদ্যপ্রয়াত বাসুদেবানন্দ সরস্বতী। সেই ঐতিহ্য এখনও বয়ে চলেছেন স্থানীয় মানুষরা। মেলা কমিটির সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’দিন ধরে চলা এই মেলায় প্রথম দিন থাকবে পুজা ও প্রসাদ বিতরণ। পরের তিনদিন ধরে চলবে কীর্তন। পঞ্চম দিনে থাকবে চারজন বাউলের উপস্থিতিতে সারারাত ব্যাপী বাউল সম্মেলন। ১২ ফেব্রুয়ারি কবিগানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। শুধু উৎসব নয়, প্রতি বারের মতো এ বারও থাকছে নানা অনুষ্ঠান।
সালানপুরের সামডির এক সময়ের জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ের উপর এই দেবীর অধিষ্ঠান। ছ’টি ঘোড়ায় টানা রথের উপর বসে আছেন এক নারীমূর্তি। হাতে তাঁর তীর ধনুক। ফুলবেড়িয়ার স্বপন দাসের মতে, এক সময়ে এখানে বসবাসকারী ওঁরাও জনগোষ্ঠীর আরাধ্য দেবী চণ্ডীর শিলাই কালক্রমে হয়েছে মুক্তাইচণ্ডী।
লোকমুখে শোনা যায়, অধুনা ঝাড়খণ্ডের পাঁড়রার জমিদার ঠাকরুণ সাহেব ও বাবু সাহেব এই দেবীর নিত্যপুজোর ভার দিয়েছিলেন বোলকুণ্ডার মুখোপাধ্যায় এবং ফুলবেড়িয়ার চক্রবর্তী পরিবারকে। এখনও সেই কাজ করে যাচ্ছেন এই দুই পরিবার। কালক্রমে মেলাও রূপ নিয়েছে লোকসংস্কৃতি প্রচার কেন্দ্রের। ফুলবেড়িয়া, সামডি, পাতাল, বোলকুণ্ডা, ডাবর, আছড়া, আলকুশা, বাসুদেবপুর, জেমারি, ধুন্দাবাদ, বনবিড্ডি, লালগঞ্জ, দনার্দনসায়ের-সহ ২২টি গ্রামের মানুষ জড়ো হন এই মেলাকে কেন্দ্র করে।
পাঁচগাদিয়ার বাসিন্দা, কীর্তনীয়া অঞ্জন উপাধ্যায়, মেলা কমিটির সদস্য তাপস উকিলের কথায়, “মকর সংক্রান্তিতে জয়দেব মেলার রেশ কাটতে না কাটতেই মাঘী পূর্ণিমার এই মেলা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।”
মুক্তাইচণ্ডী মেলা সমিতির সম্পাদক দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাসুদেবানন্দজী এলাকায় শুধু সন্ন্যাসী নন, সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এলাকাবাসীর হয়ে আমরা কিছুটা ঋণ শোধ করার চেষ্টা করেছি।” |