দুর্ঘটনায় হুঁশ ফেরেনি পুলিশের, লরি দাপাচ্ছেই
রির প্রবেশ নিষেধ। রাস্তার পাশে যত্রতত্র গাড়ি রাখারও নিয়ম নেই। কিন্তু বুধবার সকালে রাস্তায় নেমে দেখা গেল অন্য রকম ছবি।
• সকাল সাড়ে ৮টা। সেন র্যালে রোডের জুবিলি মোড় দিয়ে দ্রুত গতিতে আসানসোলে ঢুকল পণ্য বোঝাই লরি। পুলিশ দর্শক।
• সকাল পৌনে ৯টা। আসানসোলে ভগৎ সিংহ মোড়ে পুলিশ লাইনের কাছ দিয়েই শহরে ঢুকছে লরি। পুলিশ আটকাচ্ছে না।
• সকাল সওয়া ১০টা। বিএনআর চৌমাথা ধরে আসানসোল আদালতের দিকে চলেছে লরি, ডাম্পার।
• সকাল পৌনে ১১টা। বিএনআর সেতু দিয়ে দুরন্ত গতিতে আসানসোল শহরের অভিমুখে ছুটে যাচ্ছে লরি।
• দুপুর ১টা। কুলটির নিয়ামতপুর চৌমাথা, নিউ রোড চৌমাথা ধরে একের পর এক লরি ঢুকছে-বেরোচ্ছে।
ঘটনা হল, এই সব ক’টি রাস্তা দিয়েই সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লরি চলাচল নিষিদ্ধ।
ভগৎ সিংহ মোড়। সকাল ৮.৪৫ রানিতলা। সকাল ৯.৩০
ট্রাফিক পুলিশের ভাষায়, ‘নো এন্ট্রি জোন’। সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক) এই নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির যে বিশেষ পরিবর্তন হয়নি, তার প্রমাণ এ দিনই মিলেছে। মঙ্গলবার দুপুরেই কুলটিতে জি টি রোডে একের পর এক ধাক্কা মেরে উল্টে যায় একটি লরি। চালক-সহ চার জন মারা যান। ওই এলাকা ‘নো এন্ট্রি জোন’-এর মধ্যে না পড়ায় সরাসরি দায় নিতে হয়নি ট্রাফিক পুলিশকে। কিন্তু এলাকার মানুষের মনে এখনও সেই আতঙ্ক চেপে বসে আছে। কুলটি পুরসভা এলাকাতেও জি টি রোড-সহ অন্য জনবহুল রাস্তায় দিনের বেলায় লরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ চাইছেন তাঁরা।
পথচারীদের আশঙ্কা, বেপরোয়া লরি চলাচল নিয়ন্ত্রিত না হলে ফের ওই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। একাধিক ব্যক্তি ও গণসংগঠনের তরফে কুলটির পুরপ্রধানের কাছে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লরি চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। সেই সব আবেদন বিবেচনার জন্য এডিসিপি (ট্রাফিক)-এর কাছে পাঠাবেন বলেও পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় জানান।
বিএনআর। সকাল ১০.৪৫ নিয়ামতপুর। দুপুর ১টা
কুলটিতে দুর্ঘটনার পরে এডিসিপি (ট্রাফিক) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, বিভিন্ন এলাকায় ‘নো এন্ট্রি’ না থাকলেও তাঁরা লরির গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবেন। তা এখনও হয়নি। সকাল থেকেই লরির চেনা দৌরাত্ম্য চোখে পড়েছে প্রায় সর্বত্রই। মঙ্গলবার যে রানিতলায় লরিটি প্রথম মা-ছেলেকে ধাক্কা মারে, সেখানেও চিত্র অপরিবর্তিত।
সকাল সাড়ে ৯টা। কুলটির রানিতলা থেকে জি টি রোড ধরে লরি ছুটল আসানসোলের দিকে।
সকাল পৌনে ১০টা। কুলটির থানা মোড় থেকে জি টি রোড ধরে আসানসোলের দিকে চলল লরি।
বেলা যত গড়িয়েছে, ততই বেড়ে গিয়েছে লরি চলাচল। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ‘ভেহিকেল পাস’ স্টিকার লাগিয়েও ঘুরতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু লরিকে। এই সব স্টিকার কারা কীসের ভিত্তিতে দিয়েছে তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। কেননা ট্রাফিক পুলিশ এ রকম স্টিকার দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
শুধু লরিই বা কেন? রাস্তার পাশে যত্রতত্র অবৈধ ভাবে গাড়ি রাখাও দেখা গিয়েছে সমান তালে। এডিসিপি (ট্রাফিক) দাবি করেছিলেন, জি টি রোড বা অন্য জনবহুল রাস্তার দু’পাশে ৬ ফুটের মধ্যে গাড়ি রাখা যাবে না। কিন্তু কোথায় কী? এ দিন আসানসোল বাজার থেকে নিয়ামতপুর, সর্বত্র জি টি রোডের গা ঘেঁষেই ছিল ‘পার্কিং’। পুলিশের নজরদারি চোখে পড়েনি।
এডিসিপি (ট্রাফিক) ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের যুক্তি, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও লরি চলাচল বা গতি নিয়ন্ত্রণের কাজ পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। তাঁর বক্তব্য, “দিন তিনেক আগে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তা পুরোপুরি কার্যকর করতে আরও কিছু সময় লাগবে।’’ তিনি জানান, শহরের মধ্যে লরি চলাচলের জন্য কোনও চালক বা মালিককে ‘ভেহিকেল পাস’ দেওয়া হয়নি। এই সব লরি ধরার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও কতটা সময় গেলে ‘নিয়ম’ মানবে শিল্পাঞ্চলের রাস্তা, সেই প্রশ্ন আপাতত থাকছেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.