বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি দোকান ছাই হয়ে গেল। সোমবার সকালে তুফানগঞ্জের বলরামপুর চৌপথি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। তুফানগঞ্জ থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিন গিয়ে প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল কর্তাদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সব মিলিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্যাবসায়ীদের অনুমান। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাবসায়ীদের আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধি বলেন, “আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা ব্যাঙ্ক ঋণের জন্য আবেদন জানিয়ে কপি দিলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যাপারে উদ্যোগী হব।” তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিডিও তাপস সিংহরায় বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে পুরো বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেটা এলেই প্রাথমিক ত্রাণ সাহায্য দেওয়া হবে।” |
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টা নাগাদ কোচবিহার- তুফানগঞ্জ রাস্তার বলরামপুর চৌপথি এলাকার বাজার লাগোয়া এলাকার একটি কাপড়ের দোকানে ধোঁয়া দেখেন কয়েকজন প্রাতঃভ্রমণকারী। তাদের চিৎকারে আশেপাশের বাসিন্দারা ছুটে যান। তুফানগঞ্জ থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিনও ঘটনাস্থলে যায়। তার মধ্যেই আরও ১২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ওই সব দোকানের মধ্যে কাপড়ের দোকান ছাড়াও চা, তামাক, ওষুধ, মুদিখানা, স্টেশনারি, ডেকরেটরের দোকানও রয়েছে। বলরামপুর চৌপথি এলাকার ব্যবসায়ী প্রদীপ বসাক বলেন, “সকালে কাপড়ের দোকানে ধোঁয়া দেখে প্রাতঃভ্রমণকারীরা সোরগোল করায় ঘটনা জানাজানি হয়। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে দেখি ১৩টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। অল্পের জন্য আমার দোকান রক্ষা পেয়েছে। দমকল তৎপর না হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যেত।” স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কলকাতায় থাকলেও আগুন লাগার খবর পেয়ে দলের নেতাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেশ দেন। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্যের আর্জি জানান। বিধায়ক বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্যের ব্যাপারে কথা বলেছি। আমি নিজে জেলায় ফিরে ঘটনাস্থলে যাব।” তুফানগঞ্জ দমকল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিনয় সরকার বলেন, “সর্টসার্কিট থেকে ওই ঘটনা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” সম্প্রতি কোচবিহারের বাণেশ্বরে পরপর দুবার, চিলাখানা, পেস্টারঝাড়-সহ জেলার অন্তত পাঁচটি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে ক্ষয়ক্ষতি হয়। এদিনের ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই গ্রামীণ বাজার ও লাগোয়া ব্যবসায়িক চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের। কোচবিহারের জেলাশাসক বলেন, “এ ধরনের ঘটনা এড়াতে বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হচ্ছে।” |