বরাহনগরের একটি ফ্ল্যাটে সোমবার ভরসন্ধ্যায় এক প্রৌঢ়াকে খুন করে ডাকাতি হয়েছে। পুলিশ জানায়, প্রৌঢ়ার নাম মঞ্জু দে (৫২)। ভাই প্রণব দে-র সঙ্গে থাকতেন তিনি। সন্ধ্যার একটু পরে ঘরে ফিরে প্রণববাবুই প্রথমে তাঁর দিদির দেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। ঘর ও আলমারি লন্ডভন্ড। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান দীপনারায়ণ গোস্বামী বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শ্বাস রোধ করে মঞ্জুদেবীকে খুন করা হয়েছে। খোয়া গিয়েছে সোনার গয়না ও টাকা। লুঠপাটে বাধা দেওয়াতেই ওই মহিলাকে খুন হতে হল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ জানায়, মঞ্জুদেবীর গলায় মাফলার প্যাঁচানো ও শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে।
মঞ্জুদেবী ও প্রণববাবু দু’জনেই অবিবাহিত। বরাহগরের বীর অনন্তরাম মণ্ডল লেনে একটি বাড়ির একতলায় তাঁদের ফ্ল্যাট। পুলিশি সূত্রের খবর, বরাহগরের বিধান মার্কেটে প্রণববাবুর কাচের দোকান আছে। এ দিন দুপুরে তিনি বাড়িতে মঞ্জুদেবীর সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে দোকানে বেরিয়ে যান। কাচ কাটার একটি যন্ত্র নেওয়ার জন্য প্রণববাবু সন্ধ্যার একটু পরে বাড়ি ফেরেন। দেখেন, বাড়ির দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া। দিদি বাইরে কোথাও বেরিয়েছেন ভেবে তিনি দোকান থেকে বিকল্প চাবি এনে বাড়ির দরজা খুলে দেখেন, মঞ্জুদেবীর দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে। গলায় মাফলার প্যাঁচানো। বিছানার নীচে বসে আছে তাদের পোষা কুকুর। ঘর ও আলমারি লন্ডভন্ড।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঞ্জুদেবী কয়েক মাস ধরে অসুখে ভুগছিলেন। বেশি ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারতেন না। পড়শিরা জানান, দিদির সঙ্গে প্রণববাবুর সম্পর্ক ভাল ছিল। দিদির সেবা-শুশ্রূষা করতেন প্রণববাবুই। দিদির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন প্রণববাবু। তিনি বলেন, “দিদি আর নেই, ভাবতেই পারছি না। এই অঞ্চলে খুব চুরি হয় বলে দিদিকে সব সময়েই বাইরের দরজা বন্ধ রাখতে বলতাম। কিন্তু অসুস্থতার কারণে দরজা খুলতে বা বন্ধ করতে সমস্যা হত ওঁর। তাই উনি অনেক সময় সদর দরজা খোলা রাখতেন। ডাকাতদের বাধা দিতে গিয়েই দিদিকে প্রাণ দিতে হল।” |