|
|
|
|
|
|
যতগুলি প্রশ্ন জানা রয়েছে
ততগুলিরই উত্তর দাও |
ভবানী প্রসাদ সিংহ
ডিন অব স্টাডিজ, আই এস আই |
আই এস আই এর বি স্ট্যাট ও বি ম্যাথ-এ ভর্তির জন্য যে পরীক্ষা হয় তাতে অঙ্ক থাকে মোটামুটি দ্বাদশ শ্রেণির। তবে দ্বাদশ শ্রেণি বলতে শুধু রাজ্যের হায়ার সেকেন্ডারি বোর্ড-এর অঙ্ক ধরলে হবে না। এটা সর্বভারতীয় পরীক্ষা বলে এখানে অন্যান্য বোর্ডের ছেলেমেয়েরাও এখানে পরীক্ষা দেয়। তাই আমরা এমন ভাবে প্রশ্ন তৈরি করি যাতে প্রশ্নের মান সবার ক্ষেত্রেই এক থাকে। দ্বাদশ শ্রেণির চেয়ে বেশি জ্ঞান ছাত্রছাত্রীদের থাকবে, সেটা আমরা আশা করি না। তাই প্রশ্ন থাকে অঙ্কের ফান্ডামেন্টালস্ থেকে। তুমি হয়তো অনেক বইয়ের অনেক অঙ্কই সল্ভ করেছ। সেটা বুঝেও করতে পারো, আবার না বুঝে মেকানিক্যালিও করতে পারো। আমরা দেখতে চাই ছাত্র বা ছাত্রীটির বেসিক জ্ঞানটা তৈরি হয়েছে কিনা। শুধু স্নাতক স্তরের ক্ষেত্রেই নয়, এম স্ট্যাট, এম
ম্যাথ বা এম টেক (কম্পিউটার সায়েন্স)-এর মতো উচ্চতর কোর্সগুলির ক্ষেত্রেও আমরা এই একই জিনিস যাচাই করার চেষ্টা করি। এখানে থাকে বি এসসি পাস পর্যায়ের অঙ্ক। অনেক সময় মাস্টারমশাইরা জানেন যে কোনও একটি অঙ্কের ক্ষেত্রে ছাত্ররা একটা ‘সাধারণ ভুল’ খুব করে। পরীক্ষার প্রথম ভাগে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নপত্রের উত্তরের চারটি অপশনের মধ্যে তাই সেই ভুল উত্তরটাও রেখে দেওয়া হয়। যার বেসিক কনসেপ্ট ঠিক আছে সে এই ভুল করবে না। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা। কিছু কিছু এম সি কিউ-এর ক্ষেত্রে চারটে উত্তরের অপশনের মধ্যে একাধিক উত্তর হয়তো ঠিক। তেমন হলে প্রশ্নপত্রে যে নিদের্শাবলি দেওয়া হয় তাতে এই বিষয়টির উল্লেখ থাকে। তাই প্রশ্ন পড়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সংশ্লিষ্ট নির্দেশাবলীতেও ভাল করে চোখ বোলানো দরকার। আমাদের এম সি কিউ-এ মার্কিং পদ্ধতির একটি বৈশিষ্ট্য আছে। এখানে নেগেটিভ মার্কিং থাকে না; ঠিক উত্তর করলে চার পাবে, ভুল করলে শূন্য, না করলে এক। অর্থাৎ যদি তুমি জানো না বলে প্রশ্নটি ছেড়ে দাও তা হলে তুমি ১ নম্বর পাচ্ছ। এর পেছনে যুক্তিটা হল যে কেউ যেন যথেচ্ছভাবে উত্তর দিয়ে নম্বর না পেয়ে যায়। কেউ যদি না জেনে দুমদাম উত্তর করে আর সেটা ভুল হয় তা হলে সে শূন্য পাচ্ছে। কিন্তু ছেড়ে দিলে সে এক পাচ্ছে। ফলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যতগুলি প্রশ্ন জানো ততগুলিই উত্তর দাও, বাকি ছেড়ে দাও। সমস্ত মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নেই এই সিস্টেম থাকে।
ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নের ক্ষেত্রেও সাধারণত এমন প্রশ্ন করা হয় না যাতে পাতার পর পাতা লিখতে হবে।
কোনও অজানা প্রশ্ন সে কী ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছে আমরা সেটাই দেখি। হতেই পারে ছাত্রটি কোনও একটি অঙ্ক ঠিক পদ্ধতিতেই করেছে, কিন্তু শেষে ক্যালকুলেশনের জন্য অঙ্কের উত্তর এসেছে ভুল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সব ভুলের জন্য আমরা খুবই কম নম্বর কেটে থাকি।
শুনলে অনেকেই হয়ত অবাক হবে, আই এস আই-তে কোনও আসন সংখ্যার ব্যাপার নেই। এখানে যত জন ছেলেমেয়ে পরীক্ষায় ভাল করবে তত জন ছেলেমেয়েই চান্স পাবে। এই ‘ভাল’ কথাটা বললাম কারণ লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি ইন্টারভিউতেও ছাত্রকে ভাল করতে হবে। হতেই পারে, কোনও ছেলের প্রবেশিকা পরীক্ষাটা তত ভাল হয়নি। আবার আর একটি ছেলে প্রবেশিকা পরীক্ষায় দারুণ ফল করেছে। ইন্টারভিউতে আমরা যাচাই করে নিই যে কেউ এক জন ভাল না দু’জনেই ভাল। এই ভাবে যদি দেখা যায় যে অনেক ভাল ছেলেমেয়ে রয়েছে তা হলে তারা সবাই এখানে পড়ার চান্স পাবে। না হলে সংখ্যা কমবে। সেই কারণেই কোনও এক বছরে কোনও একটি কোর্সে ভর্তির জন্য অনুমোদিত ছাত্রসংখ্যা হয় আশি, আবার কোনও বছর সেটা কমে দাঁড়ায় তিরিশে। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী আমাদের এখানে পড়ার ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু তার জন্য সাধারণ ক্যাটেগরির ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হয় না। এ ছাড়া কোনও মেধাবী ছাত্র যদি আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল হয় তাকে পড়ার জন্য যথা সম্ভব অর্থনৈতিক সাহায্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
উচ্চ স্তরে আই এস আই তে যে শুধু অঙ্ক, স্ট্যাটিসটিক্স, অর্থনীতি বা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েই গবেষণা হয় তা নয়। এগ্রিকালচার, জিয়োলজি, লিঙ্গুইস্টিক্স এর মতো নানা বিষয়ে নিয়েও এখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তা ছাড়া, এখানে গবেষণার ক্ষেত্রে কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই। এক জন কম্পিউটার সায়েন্স-এর শিক্ষক ইচ্ছে করলে বায়োলজির কোনও একটি বিষয়ে নিয়ে গবেষণা করতে পারেন এবং তিনি সেই বিষয়ে গবেষণার জন্য ছাত্র নিতে পারেন। |
|
|
|
|
|
|