|
|
|
|
প্রতি জেলায় হস্তশিল্পের মার্কেটিং সেন্টার |
হাবরায় বাণীপুর লোক-উৎসবের উদ্বোধনে এসে বললেন অর্থমন্ত্রী |
সীমান্ত মৈত্র • হাবরা |
রাজ্যে হস্তশিল্পের মার্কেটিং-এর অভাব রয়েছে। সে জন্য প্রতি জেলায় একটি করে মার্কেটিং সেন্টার খোলা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ভবিষ্যতে প্রতিটি মহকুমাতেও ওই সেন্টার খোলা হবে। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় বাণীপুর লোক উৎসবে এসে এ কথা জানালেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ৫৮ তম বছরে পা দেওয়া এই উৎসবের উদ্বোধন করেন লোকসঙ্গীত শিল্পী ফকির আব্দুল হালিম। এ দিন উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নাট্য ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, জেলার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য, হাবরা ও অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান তপতী দত্ত, সমীর দত্ত প্রমুখ। উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর, লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতিকেন্দ্র, নাট্য অ্যাকাডেমি ও রাজ্য চারুকলা পর্ষদ।
অমিতবাবু বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকীকরণের মিশ্রণ ঘটাতে হবে। তা না করতে পারলে ঐতিহ্যের বিপদ হবে।” তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, আধুনিকীকরণের ঢেউয়ে যাতে লোকসংস্কৃতি মুছে না যায় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। লোকসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে সংস্কৃতির স্তম্ভ হিসাবে। |
প্রদীপ জ্বালছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। |
উৎসব উপলক্ষে স্থানীয় হাবরা সবুজ সঙ্ঘের মাঠ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। গরুর গাড়ি, কুচকাওয়াজ, রণপায় সজ্জিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তায় ভিড় করেছিলেন বহু মানুষ। উৎসবে এ বার চারটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মূল মঞ্চের নামকরণ হয়েছে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার নামে। বাকি তিনটি মঞ্চের নামকরণ হয়েছে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, বাদল সরকার এবং ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদের নামে। বিভিন্ন দিনে আয়োজন করা হয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনীর। যার মধ্যে রয়েছে সানাইবাদন, নাটক, পথনাটিকা, ছৌনৃত্য, জাদু প্রদর্শনী, যাত্রা, যোগাসন, জিমন্যাস্টিক, ক্যারাটে ইত্যাদি। এ ছাড়াও রয়েছে মতুয়া সঙ্গীত, লোকনাট্য, কবিগান, রায়বেঁশে, মূকাভিনয়, পুতুলনাচ, লেটো, রামযাত্রা, ঝমুর, তরজা গান, স্লাইড-শো। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে রয়েছে কুসংস্কারবিরোধী, বিজ্ঞানমনস্ক অনুষ্ঠান। উৎসবে বহুরূপী হিসাবে দেখা যাবে শিল্পী সুবলদাস বৈরাগ্য ও নিত্যানন্দ মহান্তকে।
উৎসবে স্বাস্থ্যমেলারও আয়োজন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিনাব্যায়ে চক্ষু পরীক্ষার ব্যবস্থা। রয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। কবাডি, ফুটবল, সফট বল এবং মহিলাদের ভলিবল প্রদর্শনী-সহ আট দলের নকআউট দড়ি টানাটানি প্রতিযোগিতা অন্যতম আকর্ষণ। বিনোদনের পাশাপাশি ‘ভারতীয় সংস্কৃতি ও স্বামীজি’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়েছে। বিভাসবাবু বলেন, “বাণীপুর লোক উৎসব সত্যিকারের লোক উৎসব। কারণ এখানে সমস্ত শ্রেণির মানুষ একত্রিত হন।” জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “বাণীপুর লোক উৎসব রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক মেলা। যা সাধারণ মানুষের উৎসবে পরিণত হয়েছে। এখানে কোনওভাবেই রাজনীতির প্রবেশ ঘটতে দেওয়া হবে না।” |
উৎসবে ছৌ নৃত্য। |
উদ্যোক্তাদের কথায়, পাঁচের দশকে যখন লোক উৎসব শুরু হয় তখনই এই উৎসবের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যাতে এই মিলন মেলায় সকলেই যোগ দিতে পারেন। সেইসঙ্গে দেশের বর্ণময় লোকসংস্কৃতিকে সকলের সামনে তুলে ধরা ও তাকে সযত্নে রক্ষা করে চলা। এদিন মেলায় ঘুরতে ঘুরতে স্থানীয় স্নেহা দাস, মুনমুন দেবনাথরা জানালেন, “বছরভর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বিভিন্ন অঞ্চলের লোক সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে দারুণ লাগে।”
মেলা চলবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
|
নিজস্ব চিত্র |
|
|
|
|
|