জট কাটেনি, সহারাকে বোঝানোর চেষ্টা শুরু
ইপিএল নিলামের ২৪ ঘণ্টা পরেও সহারাকে নিয়ে অচলাবস্থা কাটেনি। রবিবার রাত পর্যন্ত অন্তত তেমন কোনও সমাধানসূত্রের খোঁজ মেলেনি যা দেখে বলা যেতে পারে বরফ গলতে শুরু করেছে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টিম নিয়ে আইপিএল-ফাইভে নামলেও নামতে পারেন।
ভারতীয় বোর্ডের তরফে ভেতরে ভেতরে যতই চেষ্টা চলুক সহারাকে বোঝানোর, উৎসাহব্যঞ্জক কিছু শোনানোর মতো জায়গায় তারাও এখনও আসতে পারেনি। রবিবার রাতে আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্ল আনন্দবাজারকে বললেন, “আমরা সরকারি ভাবে সহারার কাছ থেকে এখনও কোনও ই-মেল বা বার্তা পাইনি যে, ওরা টিম তুলেই নিচ্ছে। আইপিএল চেয়ারম্যান হিসেবে আমি আশা করব, সমস্যা মিটে যাবে এবং সহারা আইপিএলে খেলবে।”
গত কাল সুব্রত রায়ের সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্য রিওয়াইন্ড করে অনেকে যদিও খুব আশাবাদী যে, একটা না একটা সমাধানসূত্রের খোঁজ ঠিক মিলবে। বিশেষ করে তিনি যখন বলেছেন যে, তিনি চান পুণের প্লেয়াররা খেলুন। পুণে ওয়ারিয়র্স অধিনায়ক পর্যন্ত যে বক্তব্য শুনে আশাবাদী। তাঁর টিমের অনেক প্লেয়ার থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফ সারা দিনে খোঁজ নিয়েছেন আলোর হদিস মিলল কি না। সৌরভ যদিও রাতের দিকে বললেন, নতুন কোনও খবর আর পাননি। অস্ট্রেলিয়ায় ধারাভাষ্য দিতে আর ফিরছেন না সৌরভ। আপাতত কলকাতায় বসে আইপিএল-ভাগ্য কী দাঁড়ায় তার অপেক্ষা। কারও কারও যদিও মনে হচ্ছে, জট খোলার সামান্য লক্ষণ দেখা দিলে সৌরভকে লখনউ দৌড়তে হতে পারে পুণে ওয়ারিয়র্স নিয়ে শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত সে রকম কোনও বার্তা নেই। “নতুন করে আমি আর কিছু শুনিনি। দেখা যাক কী হয়,” বললেন সৌরভ।
সমস্যা হচ্ছে, আপসের রাস্তাও দ্রুত মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে নিলাম হয়ে যাওয়ার পর। প্রশ্ন উঠছে, নিলামে প্রায় সব ভাল প্লেয়ার বেরিয়ে যাওয়ার পর এখন সহারাকে সন্তুষ্ট করতে বোর্ড ‘সমাধানসূত্র’ হিসেবে তাদের নতুন কোন ভাল প্লেয়ার দিতে পারে? পড়ে আছেন তো শুধু অবিক্রীত প্লেয়াররা। একমাত্র সমাধানসূত্র যেটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তা হল আইপিএল কমিটি অনুমতি দিল সহারাকে পাঁচ বিদেশি খেলানোর। যে রকম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে তারা অনুমতি দিয়েছিল। যুবরাজ সিংহের যে ক্যানসারই হয়েছে এ দিন সে কথা স্বীকার করেছেন তাঁর ফিজিও। যে খবর এত দিন কেউ সরকারি ভাবে স্বীকার করেনি। একমাত্র গত ২৮ নভেম্বরের আনন্দবাজার ছাড়া কোথাও বারই হয়নি যে, যুবরাজের বুকের টিউমার মোটেও নন-ম্যালিগন্যান্ট নয়। সেটা মাথায় রেখে যদি নিয়ম পাল্টে বিশেষ ছাড় দেওয়ার কথা ভাবে আইপিএল কমিটি। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিদের রাজি করানোর ব্যাপার থাকছে। কিন্তু অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিদের যা মনোভাব, তারা এ ধরনের কোনও আপসে রাজি হবে বলে ভাবা যাচ্ছে না।
দু’তরফে দু’রকম অনুযোগ শোনা যাচ্ছে নিলামকে কেন্দ্র করে। বোর্ড এবং আইপিএল কমিটির কর্তাদের বক্তব্য, সহারা নিলামটায় অংশ নিয়ে প্লেয়ার কিনে তার পর না হয় বয়কট করতে পারত। তা হলে পরিস্থিতি এতটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত না। সহারা কর্তারা পাল্টা বলছেন, নিলামের আগে বোর্ড সামান্য নমনীয়তা দেখালে হয়তো এত কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হত না। সহারা চেয়েছিল যুবরাজ সিংহের জায়গায় হয় তাঁর দামের টাকাটা নিয়ে তাদের নিলামে ঢুকতে দেওয়া হোক। নয়তো অন্য কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিলামের বাইরে তাদের কিনতে দেওয়া হোক যুবরাজের দরে।
জনমত হচ্ছে, সেই প্লেয়ারের নাম রবীন্দ্র জাডেজা। তালেগোলে যাঁকে কিনল কি না বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসনের টিম চেন্নাই সুপার কিংস-ই। তা দেখে উষ্মা আরও বেড়েছে। ফের অভিযোগ উঠছে, বোর্ড প্রেসিডেন্ট তাঁর সুবিধে মতো আইপিএল রুল বুক ব্যবহার করছেন। কখনও ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চাওয়া সত্ত্বেও সমস্ত প্লেয়ারকে নিলামে তোলা হচ্ছে না ধোনিকে চেন্নাইয়ে রেখে দেওয়ার জন্য। কখনও প্লেয়ারদের নিলামে তোলা হচ্ছে রবীন্দ্র জাডেজাকে নিজের দলে নিতে হবে বলে।
আবার কেউ কেউ বোর্ড প্রেসিডেন্ট এবং প্রভাবশালী কয়েক জন বোর্ড কর্তার অভদ্র ব্যবহারের কথা বলছেন। যেমন লর্ডসে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের সময় নাকি সহারার কয়েক জন অতিথিকে ম্যাচের টিকিট দিতে অস্বীকার করে বোর্ড। খুব অপমানজনক ভাবে বলে দেয়, টিকিট কিনে খেলা দেখতে হবে। সহারা কর্তাদের বক্তব্য, প্রধান স্পনসরকে প্রাপ্য টিকিটও দেবে না বোর্ড! সেটা তা-ও তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া গেল। টিকিট না হয় টাকা দিয়ে কিনেই আমরা ম্যাচ দেখতাম। অভদ্র ব্যবহার করার অধিকার কে দিল? এটা টুকরো একটা ঘটনা। এ রকম নানা স্ফুলিঙ্গ জমতে জমতে শনিবারের বেঙ্গালুরুতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিয়েছে!
বোর্ড প্রেসিডেন্টকে নিয়ে অভিযোগের আগুন আরও উস্কে দিয়েছেন ললিত মোদী। সহারা সরে দাঁড়ানোর পর টুইটারে শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন মোদী। এমনও অভিযোগ তুলেছেন যে, পক্ষপাতিত্ব করতে করতে শ্রীনিবাসন এ বার চেন্নাই সুপার কিংসকে ভারতের জাতীয় দলই বানিয়ে দেবেন!
ঘটনা হচ্ছে, মাস দু’য়েক আগেও মোদীর টুইটার ক্রিকেট অনুরাগীদের কাছেই শুধু জনপ্রিয় ছিল। বোর্ডমহলে তার কোনও প্রভাব পড়ত না। এখন কিন্তু নয়-নয় করে অনেকের অসন্তোষই আর চাপা থাকছে না। সহারার বেরিয়ে যাওয়া এর মধ্যে সব থেকে সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে ধরা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে মাঠের ভেতরে ধোনির টিমের মতোই মাঠের বাইরে ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যে পড়েছে ধোনিদের বোর্ড!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.