ভাইয়ের হয়ে সওয়াল প্রিয়ঙ্কার
প্রধানমন্ত্রী হওয়াই লক্ষ্য নয় রাহুলের
প্রশ্নগুলো অনেক বারই উঠেছে। জবাব দিয়েছেন কোনও না কোনও কংগ্রেস নেতা। এ বার ভাই রাহুল গাঁধীকে নিয়ে সেই সব প্রশ্নের জবাবে মুখ খুললেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা স্বয়ং। জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর পদে বসাটাই রাহুলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়। গাঁধী পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টা এ ভাবে ভাবেন না। জানালেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ফল খারাপ হলে তার দায় নিতে হবে ভেবে রাহুল পিছিয়ে যাননি। তাঁর আসল লক্ষ্য, রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি বাড়ানো।
উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ফল ভাল হলে সব কৃতিত্বই যে রাহুল পাবেন, তা নিয়ে কংগ্রেসে সংশয় নেই। কিন্তু ফল খারাপ হলে রাজনৈতিক জীবনের গোড়াতেই রাহুলের ঘাড়ে ব্যর্থতায় দায় এসে পড়তে পারে বলে নেতৃত্বের মধ্যে একটা আশঙ্কাও রয়েছে। আজ সেই আশঙ্কাই উড়িয়ে দেন প্রিয়ঙ্কা। উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলাফলের সঙ্গে রাহুলের ব্যক্তিগত সম্মানের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, রাহুলের সঙ্গে অনেক আগেই তাঁর এ নিয়ে কথা হয়েছে। ২০০৭-এ উত্তরপ্রদেশ ভোটের সময়েই রাহুল মনস্থির করে ফেলেছিলেন, সে রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা করবেন। নির্বাচনে সেই প্রচেষ্টার সুফল মিলতে না-ও পারে এবং সে জন্য তাঁর ব্যক্তিগত সম্মান ক্ষুণ্ণ হতে পারে ভেবে পিছিয়ে যাননি। প্রিয়ঙ্কার কথায়, “ওঁর ভাবনা শুধু কাজ নিয়ে। ব্যক্তিগত সম্মান নিয়ে রাহুল উদ্বিগ্ন নন।”
সভায় হঠাৎ মৌমাছি। দেখছেন প্রিয়ঙ্কা। রবিবার ফতেপুরে। ছবি: পিটিআই
একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী বা কংগ্রেস সভাপতি হওয়াটাই রাহুলের রাজনৈতিক জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয় বলেও জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। তবে কাজের সুবিধার্থে কোনও পদ গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করলে, রাহুল সেই পদে বসবেন বলে জানান তিনি। বলেন, “আমরা, পরিবারের সদস্যরা এই ভাবে ভাবি না। অনেকেই বলেন, রাহুল কেন কংগ্রেস সভাপতি হচ্ছেন না? যুব কংগ্রেসে কী করছেন? কিন্তু যুব সংগঠনে রাহুল দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনছেন। দলীয় নির্বাচনে গণতন্ত্র এনেছেন। অন্য কোনও দলে দলীয় নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয় না।” একই ভাবে রাহুলের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার প্রশ্নেও প্রিয়ঙ্কার জবাব, “আমাদের সৌভাগ্য যে এক অত্যন্ত ভাল প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছি, যিনি সৎ এবং ভাল কাজও করেন। তাই এই প্রশ্ন এখনই উঠছে না।”
শুক্রবার থেকে রায়বরেলী এবং অমেঠিতে গাঁধী পরিবারের খাস তালুকে প্রচার শুরু করেছেন প্রিয়ঙ্কা, স্থানীয় বাসিন্দাদের ‘ভাইয়াজি’। ১৩-১৪ বছর বয়সে তিনি যখন বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে আসতেন, তখন এসপিজি-র কর্মীরা তাঁর জন্য এই ‘কোড নেম’ তৈরি করেছিলেন। প্রিয়ঙ্কার নিজেরও তা পছন্দ হয়নি। তাঁর অনুমান, “বোধহয় আমার ছোট চুল আর ছেলেদের মতো হাবভাব দেখে এই নামটা দিয়েছিল। তার পরে সেই নাম এখানকার লোকেদের মধ্যেও ছড়িয়ে গিয়েছে।” তখনও তাঁকে যে প্রশ্ন শুনতে হত, চল্লিশে পা দেওয়ার পরেও প্রিয়ঙ্কাকে একই প্রশ্ন শুনতে হয়। কবে রাজনীতিতে আসছেন? বরাবরের মতোই তাঁর উত্তর, “এলেই জানতে পারবেন।”
রাজনীতিতে না নামলেও গাঁধী পরিবারের হয়ে প্রচারের জন্য তাঁকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়।
এ বারও তাঁর প্রচার নিয়ে বিজেপি ও বিএসপি নেতারা কটাক্ষ করছেন যে প্রিয়ঙ্কা বঢরাকে শুধু নির্বাচনের সময়ই রায়বরেলী-অমেঠিতে দেখা যায়। হাসতে হাসতে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রিয়ঙ্কার জবাব, “ঠিকই তো, আমি শুধু নির্বাচনের কাজেই আসি। এতে তো লুকোছাপা নেই। রাহুলজি ও সনিয়াজিই সব সময় আসেন। যখন সনিয়াজির কেন্দ্রের দেখভাল করতাম, প্রায়ই আসতাম। এখন দু’দিন অন্তর রাহুল আসে। এই কারও বাড়িতে রাত কাটাচ্ছে, কোথাও পদযাত্রা করছে।” সমালোচকদের অভিযোগ হেসে উড়িয়ে দিয়েই তাঁর গলায় প্রচ্ছন্ন হুমকি, “ওঁরা কী চান, আমি রাজনীতিতে আসি? ওঁদের কোনটা পছন্দ, আমি রাজনীতি আসি না কি বাইরেই থাকি? রাজনাথ সিংহ ও মায়াবতীকে জিজ্ঞাসা করুন না!”
উত্তরপ্রদেশের লড়াই যে এ বারও কংগ্রেসের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন লড়াই, তা যেমন রাহুলের অজানা নয়, তেমনই প্রিয়ঙ্কাও সে কথা বুঝতে পারছেন। তাই কংগ্রেস কত আসন পাবে, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীতে যেতে রাজি হননি তিনি। শুধু জানিয়েছেন, আগের থেকে অনেক ভাল হবে। তাঁর যুক্তি, উন্নয়নের নিরিখে উত্তরপ্রদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আর উন্নয়নের প্রশ্নেই লড়াই করছেন রাহুল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.