সিরিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আরব লিগের প্রস্তাবকে ভারত-সহ ১৩টি দেশ সমর্থন জানালেও রাশিয়া ও চিন ভেটো দেওয়ায় সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেল। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, সিরিয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সবক’টি বিরোধী দলের সঙ্গে অবিলম্বে সরকারের কথা বলা উচিত। ভারত এই প্রস্তাব সমর্থন করে বলেছিল, সিরিয়ায় সরকারে কে থাকবে, তা ঠিক করার অধিকার সেখানকার মানুষের। ভারতের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় সিরিয়ার মানবাধিকার সংগঠনগুলি। কিন্তু এই প্রস্তাবকে ‘একপেশে’ আখ্যা দিয়ে ‘ভেটো’ প্রয়োগ করেছে রাশিয়া ও চিন। মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন রাশিয়া ও চিনের পদক্ষেপকে ‘প্রহসন’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এরই মধ্যে, সিরিয়ায় ‘গণহত্যা’র খবর চাউর হতে বিশ্বের সাতটি দেশে সিরিয়ার দূতাবাসের উপর চড়াও হয়ে ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
যে দিন রাশিয়া ও চিন প্রস্তাবের বিপক্ষে ‘ভেটো’ দিল, সে দিনই সিরিয়ায় সেনা আরও ৪৭ জনকে হত্যা করেছে বলে সে দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলি জানিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ নিয়ে সে দেশে প্রায় ২৫০ জন নিহত হলেন। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, “যে দেশের প্রশাসন সেনাকে ব্যবহার করে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে এই ভাবে হত্যা করে, সে দেশের সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।” হত্যাকাণ্ডের খবর প্রচারিত হওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিরিয়ার ৭টি দূতাবাসের উপর হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। লন্ডন, ক্যানবেরা, কায়রো, আথেন্স প্রভৃতি জায়গায় সিরিয়ার দূতাবাসের উপর হামলা চালানো হয়েছে। কোথাও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে কোথাও বা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দূতাবাসের জানলা, দরজা।
সিরিয়া সরকারের আশঙ্কা যে কোনও মুহূর্তেই সে দেশের বিরুদ্ধে অভিযানে সামিল হতে পারে ন্যাটো। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্র দাবি করেছে, এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমের দেশগুলিকে ‘শিক্ষা’ দিতে তলে তলে একটি কাজ সেরে ফেলেছেন সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের দেশগুলির জন্য নিযুক্ত আল কায়দার ‘অপরেশনাল কম্যান্ডার’ এবং লন্ডন বিস্ফোরণের মূল চক্রী আবু মুসাব আল সুরিকে মুক্তি দিয়েছে তারা। সুরি গত ছ’বছর যাবৎ সিরিয়ায় বন্দি ছিলেন। মার্কিন বিদেশ দফতর আল সুরির মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ৪৭৫ কোটি ডলার। |