আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা কৃপাসিন্ধু সাহা খুনে অন্যতম অভিযুক্ত চাঁদ শেখ। শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে এসিজেএম বিচারকের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। ওই দিন অভিযুক্তের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী প্রসেনজিৎ সাহা। তিনি বলেন, “বিচারক অভিযুক্তকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।” আজ, সোমবার তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করবে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। কৃপাসিন্ধু সাহা খুনে মূল অভিযুক্ত কেতুগ্রামের নেতা হারা শেখ এখনও অধরা। তবে তাঁর ও বাকি অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁদের সম্পত্তিও। কলকাতার মেটিয়াবুরুজ, মুকুন্দপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত বছর ৩১ ডিসেম্বর কেতুগ্রামের মালগ্রামে সেচখালের ধারে কৃপাসিন্ধুবাবুর গুলিবিদ্ধ দেহ মেলে। তাঁকে খুনের অভিযোগ ওঠে দলের ওই ব্লকেরই কার্যকরী সভাপতি হারা শেখ-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে। |
কৃপাসিন্ধুবাবু খুন হওয়ার পরে ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী তারাশঙ্কর পণ্ডিত দলের কার্যকরী সভাপতি হারা শেখ এবং দুই কর্মী আশাদুল্লা শেখ ও চাঁদ শেখের নামে কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। ঘটনার দু’দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার। কিন্তু এত দিন পরেও অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ। গত ৩০ জানুয়ারি তৃণমূল নেতা কৃপাসিন্ধু সাহাকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন কেতুগ্রামের কান্দরা গ্রামের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশ। এ ব্যাপারে ৭০৫ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। তার আগে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে কেতুগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ফ্লেক্স লাগিয়েছিল তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। নিহত নেতার স্ত্রী মধুমিতাদেবীও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন। কেতুগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি রত্নাকর দে-র বক্তব্য, “ওই খুনের ঘটনায় এক জন আত্মসমর্পণ করেছে। বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।” পুলিশের দাবি, চাঁদ শেখ ও আশাদুল্লা একই সঙ্গে ছিলেন। অন্য জায়গায় ছিলেন হারা শেখ। কেতুগ্রাম থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “পুলিশের ব্যাপক তল্লাশিতে কার্যত নিরুপায় হয়েই চাঁদ শেখ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। বাকিদের শীঘ্রই ধরে ফেলা হবে।” |