এক অফিসার-সহ ৪ জন ট্রাফিক কর্মী থাকা সত্বেও এক হোমগার্ডকে চাপা দেওয়ার পরে পিকআপ ভ্যানটি কীভাবে পালাল তা নিয়ে পুলিশ মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় হিলকার্ট রোডের হাসমিটকে কর্তব্যরত হোমগার্ড নৃপেন ঘোষকে (৫০) চাপা দেয় পিকআপ ভ্যানটি। ঘটনার ১২ ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পর রাত ১০টা নাগাদ গাড়িটি আটক করা হয়। চালককে ধরতে পারেনি পুলিশ। শিলিগুড়িতে ট্রাফিক পুলিশের চারটি গার্ড রয়েছে। সকাল ৮টাতেই সমস্ত রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। এদিনও নিয়ম মেনেই যান নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয়। সেই সময় হিলকার্ট রোডে একজনকে চাপা দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়া সহজ কথা নয় বলে একাংশ পুলিশ কর্মীর দাবি। পুলিশ কর্তারা জানান, গাড়িটির পিছু ধাওয়ার সময় একটি গাড়ি সামনে চলে আসে। সেই সুযোগে হিলকার্ট রোড সংলগ্ন একটি গলির রাস্তা ধরে গাড়িটি পালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ কর্তাদের যুক্তি মানতে রাজি নন একাংশ পুলিশ কর্মী। |
মৃত্যুর আগে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ট্রাফিক পুলিশ কর্মী নৃপেন ঘোষ। ছবি-বিশ্বরূপ বসাক। |
তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, শিলিগুড়ি শহরে চারটি প্রধান রাস্তা রয়েছে। রাস্তাগুলিতে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য চারটি ট্রাফিক গার্ড রয়েছে। একজন ইন্সপেক্টর ছাড়াও বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার রয়েছেন। ভ্যানের পশাপাশি মোটরবাইক নিয়েও ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা টহলদারি করেন। এ ছাড়াও শিলিগুড়ি থানার পুলিশের টহলদারি ভ্যান রাস্তায় থাকে। এই অবস্থায়, গাড়িটির খোঁজ করতে অপর পুলিশ কর্মীদের সাহায্য নেওয়া যেত। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের বয়ান অনুযায়ী, কোর্ট মোড়ের দিক থেকে গিয়ে পিকআপ ভ্যানটি হিলকার্ট রোডে ঢুকে গলির ভেতর দিয়ে বর্ধমান রোডের দিকে পালিয়ে যায়। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওই সময় টহলদারি অপর ভ্যানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ পিছু ধাওয়া করলে চালক সহ ওই গাড়িটিকে ধরত পারত। সেক্ষেত্রে কর্তব্যরত অপর পুলিশ কর্মীদের কী ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখা উচিত।” শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “গোটা ঘটনা আমরা খতিয়ে দেখছি। ওই গাড়িটি আটরক করা হয়েছে।”
দার্জিলিং জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকেও ওই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেন, “একজন নীচুতলার পুলিশ কর্মী বলেই হয়ত পিকআপ ভ্যান ধরতে ঢিলেমি করা হয়েছে। ওই ঘটনা অবহেলার চোখে দেখা হয়েছে। কোন উচুঁপদের পুলিশ কর্তা বা প্রভাবশালী কেউ দুর্ঘটনায় পড়লে পুলিশ কী এভাবে বসে থাকত? এটা খুব উদ্বেগের বিষয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা তাহলে কোথায়?” তিনি অভিযোগ করেন, কয়েক মাসে ফাঁসিদেওয়ায় ডিওয়াইএফআই নেতা সুজিত রায়কে একটি গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই ঘটনায় গাড়িটির হদিশ বের করতে পারেনি। |