কলেজ শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করার দাবিতে এ বার আন্দোলনে নামছে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। এই দাবিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁরা কর্মবিরতি করবেন বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক তরুণ পাত্র। ওয়েবকুটার বক্তব্য, অবসরের বয়স না বাড়ালে কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষকদের বর্ধিত বেতনের বকেয়া মেটাচ্ছে না। অথচ রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের শর্ত মানছে না।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, শিক্ষকদের অবসরের বয়সের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে। ব্রাত্যবাবু বলেন, “ওয়েবকুটার প্রতিনিধিরা ডিসেম্বরে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। ওঁদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। আলোচনার মধ্যে ওঁরা কেন আচমকা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝতে পারছি না।”
শনিবার তরুণবাবু জানান, শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা দ্রুত বেরোবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিলেও তা এখনও বেরোয়নি। তিনি বলেন, “২০০৬-এর ১ জানুয়ারি থেকে বেতন বৃদ্ধি হলেও বর্ধিত বেতনের ৮০ শতাংশ বকেয়া এখনও কেন্দ্রীয় সরকার মেটায়নি। শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ না করা হলে ওই টাকা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার ওই শর্ত মানছে না।” কলেজে কলেজে হিংসার প্রতিবাদে ১০ ফেব্রুয়ারি মৌনী মিছিলও করবে ওয়েবকুটা। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়িই শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা বেরোবে।
২০০৬-এর ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বর্ধিত বেতন কার্যকর হয়েছে। ২০০৯-এর ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত বেতন পাচ্ছেন শিক্ষকেরা। প্রশ্ন উঠেছে, অবসরের বয়স বাড়ানোর দাবি এত দিন না জানিয়ে এখন কেন সরব হল ওয়েবকুটা? ওই সমিতিতে এখনও বামপন্থী শিক্ষকদেরই প্রাধান্য। বামবিরোধী শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বর্তমান সরকারকে সমস্যায় ফেলতেই এখন অবসরের বয়স নিয়ে আন্দোলন শুরু করতে চলেছেন সমিতির নেতারা। যদিও তরুণবাবু জানিয়েছেন, সম্প্রতি সমিতির সাধারণ বার্ষিক সভায় সংগঠনের অধিকাংশ শিক্ষক সদস্যই অবসরের বয়স বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তাই তাঁদের এই আন্দোলন। সমিতির বাম-বিরোধী শিবিরের একাংশ কর্মবিরতিতে যোগ দিচ্ছে না। ওয়েবকুটার সদস্য তথা অ-বাম শিক্ষক সংগঠন ‘ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ফর অটোনমি অ্যান্ড অ্যাকাডেমিক ফ্রিডম’-এর আহ্বায়ক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেছেন, প্রায় তিন হাজার বাম-বিরোধী শিক্ষক ওয়েবকুটার কর্মবিরতিতে যোগ দিচ্ছেন না। |