মেহতাবকে ম্যাচের সেরা বলছেন মর্গ্যান
গোয়াকে এগিয়ে রেখেও হাল ছাড়ছেন না দুই কোচ
রসুমের তিন নম্বর ডার্বিতেও সুব্রত ভট্টাচার্য অপরাজিত, মোহনবাগান সমর্থকরা নাচছেন টিম বাস ঘিরে।
এ বার অন্তত আমরা হারিনি, এই আনন্দে ট্রেভর মর্গ্যানের গাড়ি ঘিরে রীতিমতো উৎসব চলছে লাল-হলুদে।
অফসাইড, গোল মিস, ম্যাচের সেরা বাছা নিয়ে ম্যাচের পর তর্ক-বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাড়ার পাড়ায়।
চিরকালীন যুদ্ধের অমীমাংসিত ফলে কিন্তু কালিদাসের গল্পকে মনে করাচ্ছে। চৌম্বকে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর লিগ টেবিল যা দাঁড়াচ্ছেতাতে ডেম্পো আরও এগিয়ে গেল। সুবিধাজনক অবস্থায় চলে গেল চার্চিল ব্রাদার্সও। খেতাবের যুদ্ধে আরও পিছিয়ে পড়ল কলকাতার দুই প্রধানইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। ডেম্পোর র্যান্টি মার্টিন্স এবং চার্চিল অধিনায়ক বেটোও কলকাতার ফলে খুশি। গোয়ায় ফোনে ধরা হলে দু’জনেই বললেন, “আমরা বলছি না লিগ মুঠোয় পুরে নিয়েছি। তবে মনে হচ্ছে এ বারও গোয়ায় আসবে খেতাব।” ট্রেভর মর্গ্যান বা সুব্রত ভট্টাচার্য গোয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি উড়িয়ে না দিলেও, স্বীকার করছেন না লিগ হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। “এখনও সাতটি করে ম্যাচ বাকি। ডেম্পোর সঙ্গেও ম্যাচ রয়েছে আমাদের। সুযোগ তো আছেই। কিন্তু এটা ঘটনা, যত ম্যাচই জিতি তাকিয়ে থাকতে হবে ডেম্পো বা চার্চিলের দিকে,” বলে দেন লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ। তার একটু পরেই মোহন টিডির মন্তব্য, “আপাতত গোয়ার দু’টো দল অঙ্কের বিচারে একটু সুবিধাজনক জায়গায় আছে ঠিক। কিন্তু লিগ থেকে আমরা এখনও ছিটকে যাইনি।”
ওডাফা গোল করতেই সেই চেনা দৃশ্য। গোলদাতার
বুট পালিশ সতীর্থ লিমার। শনিবার। ছবি: উৎপল সরকার
আজ রবিবার মারগাওতে ডেম্পোর খেলা পুণে এফ সি-র সঙ্গে। পর দিন মুম্বই এফ সির সঙ্গে খেলা চার্চিল ব্রাদার্সের। দু’টো ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকবে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা তাতে ডেম্পো ১৮ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। চার্চিল চার নম্বরে থাকলেও তারা কিন্তু অন্য অঙ্কে ভাল জায়গায়। ১৭ ম্যাচে বেটোদের পয়েন্ট ৩৩। প্রথম পর্বে যুবভারতীতে পৈলান অ্যারোজের সঙ্গে তাদের ম্যাচ বাকি। আর লিগ টেবিলে দু’নম্বরে থাকা ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ১৯ ম্যাচে ৩৫। তিন নম্বরে থাকা মোহনবাগান ১৯ ম্যাচে ৩৪। কী ভাবে খেতাবের লড়াইতে ডেম্পো-চার্চিলের সঙ্গে লড়াইতে টক্কার দিতে পারে কলকাতার দুই প্রধান? সোজা হিসেবডেম্পো এবং চার্চিলের সঙ্গে ম্যাচ জিততে হবেই। পাশাপাশি নিজেদের সব ম্যাচ জিততে হবে টোলগে এবং ওডাফাদের। যা বেশ কঠিন।
শনিবার ম্যাচের পর যুবভারতী দেখে মনে হল সবথেকে বেশি খুশি প্রশাসন এবং পুলিশ। সদস্য-সমর্থকদের কোনও ক্ষোভ নেই। টিম বাসে ওঠার সময় দেখা গেল ফুটবলাররা অনেকেই হাসছেন। তাতে অবশ্য বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াই থামেনি দুই প্রধানের হেড মাস্টারদের। রবিন সিংহের গোলটা অফসাইড থেকে করা বলে সুব্রত ভট্টাচার্য-প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়রা সরব হয়েছেন রেফারির বিরুদ্ধে, তেমনই টোলগের গোলটা কেন অফসাইড হল ঘুরিয়ে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মর্গ্যানও। স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরোনোর সময় মোহন টিডি বললেন, “রবিন তো চার-পাঁচ হাত ভিতরে ছিল। কেন অফসাইড দিল না, বুঝতে পারলাম না। টি ভি রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা গেল। আমার ছেলেরা দাঁড়িয়ে পড়েছিল অফসাইড ভেবে। রবিনের গোলটা বাতিল হলে তো আমরাই জিতি। শেষ ১৮ মিনিট দশজনে খেলেছি। তাতেও ইস্টবেঙ্গল কিছু করতে পারেনি। গোলের তিনটে সহজ সুযোগ ওই সময়ই পেয়েছি আমরাই।” কিন্তু গোলটা যদি অফসাইডেই হয় তা হলে আনোয়ার, কিংশুকরা কেন প্রতিবাদ করল না? মোহন কোচ প্রশান্ত যুক্তি দিলেন, “আমাদের ছয়-সাত জনের একটা করে হলুদ কার্ড ছিল। সে জন্যই বলে দেওয়া হয়েছিল রেফারি যাই করুক, তর্ক করতে যাবে না। সে জন্যই কেউ প্রতিবাদ করেনি।” রবিনের গোলটা কি অফসাইড ছিল? “আমি যেখানে ছিলাম সেখান থেকে বোঝা সম্ভব নয়। তবে টোলগের গোলটা বাতিলের সময় একজন এস এম এস করে বলল ওটা অফসাইড ছিল না। ওডাফার গোলের আগে ফ্রি কিকও তো কুড়ি গজ এগিয়ে গিয়ে করা হয়েছিল,” চতুর মর্গ্যান ধোঁয়াশা রাখলেন।
অফসাইড নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যে ম্যাচের সেরা বাছা নিয়ে বিতর্কে অবশ্য দেখা গেল, মর্গ্যান-সুব্রত একই বিন্দুতে। ফেডারেশন নিয়ম করেছে ম্যাচের সেরা বাছবেন ম্যাচ কমিশনার। যা নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক চলছে। এ দিন সেই দায়িত্বে ছিলেন গুজরাটের গুলাব সিংহ চৌহান। সুব্রত বললেন, “কে রবিনকে বাছল জানি না। তবে যেই বেছে থাকুক সে একটা অপদার্থ। সেরা হওয়া উচিত ছিল আমাদের আনোয়ারের।” তাঁর দলের স্ট্রাইকার সেরা হলেও মর্গ্যানও বলে দিলেন, “রবিনকে নিশ্চয়ই গোলটার জন্য দিয়েছে। ওডাফাও তো ভাল গোল করেছে। কিন্তু আমার মতে ম্যাচের সেরা মেহতাব।” বাড়ি ফেরার সময় মেহতাব হোসেনকে নিয়েই নিজের গাড়িতে উঠলেন মর্গ্যান।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.