অবশেষে দেশ জুড়ে ডিজিটাল কেব্ল টেলিভিশন পরিষেবা পুরোমাত্রায় চালুর ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। আগামী ১ জুলাই থেকে তা চালু করার ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি রয়েছে ‘ডিরেক্ট টুু হোম’ বা ডিটিএইচ পরিষেবার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাজার হারানোর আশঙ্কা। এ বার তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে উঠেপড়ে লেগেছে শিল্পমহল।
ছ’বছর আগেই খাতায়-কলমে চালু হয় ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর কেব্ল-টিভি পরিষেবা। কিন্তু এখনও বৃহত্তর কলকাতার নামমাত্র অংশেই তা মেলে। তবে ১ জুলাই থেকে দেশের অন্য মেট্রো শহরের পাশাপাশি বৃহত্তর কলকাতাতেও পরিষেবা চালুর যে নির্দেশ কেন্দ্র দিয়েছে, তা পূরণ করতে কৃতসংকল্প শিল্পমহল। তাদের হিসেবে, এ জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে শুধুমাত্র বৃহত্তর কলকাতাতেই ৭০০ কোটি টাকারও বেশি লগ্নি হবে।
২০০৬ সালে দক্ষিণ কলকাতার কিছু অংশে শুরু হয় ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা ‘কন্ডিশনাল অ্যাকসেস সিস্টেম’ (ক্যাস)। বৃহত্তর কলকাতায় তা চালু হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা থমকে যায়। ফলে অধিকাংশ গ্রাহককে পুরনো অ্যানালগ পরিষেবাই দিচ্ছিল সংস্থাগুলি। কিন্তু কেন্দ্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ৩০ জুনের পর থেকে দেশের চারটি মেট্রো শহরে আর অ্যানালগ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে না।
ডিজিটাল প্রযুক্তির সফটওয়্যার নির্মাতা সংস্থা এনডিএস-এর জয়ন্ত চাঙ্গরানির বক্তব্য, এই পরিষেবার ক্ষেত্রে দিল্লি ও মুম্বইয়ের থেকে পিছিয়ে থাকলেও কলকাতা এগিয়ে রয়েছে চেন্নাইয়ের চেয়ে। তিনি বলেন, কলকাতায় ‘পে চ্যানেল’-এর চাহিদা বেশি। ফলে পরিকাঠামো গড়তে পারলে এ বার কেব্ল পরিষেবাতেও ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু করা সহজ হবে। পরিষেবা সংস্থা ডিজি কেব্ল-এর এমডি ও সিইও জগজিৎ সিংহ কোহলি-র মতে, এই সিদ্ধান্ত দেশের টিভি পরিষেবার পক্ষে একটা বড় পদক্ষেপ। তাঁর দাবি, ডিজিটাল পরিষেবায় খরচ যেমন কমবে, তেমনই চ্যানেলের সংখ্যাও বাড়বে।
কেব্ল টিভি ইক্যুইপমেন্টস ট্রেডার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিটিএমএ)-এর হিসেবে, বৃহত্তর কলকাতায় প্রায় ২৭ লক্ষ গ্রাহকের এখন পুরনো অ্যানালগ কেব্ল-সংযোগ রয়েছে। ডিজিটাল পরিষেবায় তাঁদের সকলকেই এ বার ‘সেট টপ বক্স’ (এসটিবি) নিতে হবে। সিটিএমএ-এর সেক্রেটারি কে কে বিনানি-র হিসেবে, এ জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার লগ্নি হবে এ ক্ষেত্রে। ডিজি কেব্ল-এর দাবি, পরিকাঠামো গড়তে তারাই প্রায় ২২৫ কোটি টাকা লগ্নি করছে। আর এক সংস্থা জিটিপিএল জানিয়েছে, সিসকো-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আধুনিক প্রযুক্তি সেট টপ বক্স আনছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, একটি সেট টপ বক্সের দাম ১৫০০ টাকা। সিটিএমএ-এর অন্যতম কর্তা সুরেশ শেঠিয়ার বক্তব্য, বিপুল সংখ্যক সেট টপ বক্স এই সময়ের মধ্যে জোগান দেওয়াটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তবে এখন থেকেই উদ্যোগী হলে ছ’সাত মাসের মধ্যে তা করা সম্ভব। তিনি জানান, গ্রাহকদের সচেতনতা ড়াতে কেব্ল-অপারেটর সংস্থার কর্মীদের প্রশিক্ষণ রু হয়েছে।
ডিজি কেবল-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অমিত নাগ জানান, তাঁরা এ শহরে রোজ ১০০০টি নতুন এসটিবি লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। এপ্রিল থেকে তা বেড়ে হবে দৈনিক ১০,০০০। জুনের মধ্যে এ ভাবে প্রায় ১৫ লক্ষ কেব্ল-এ এসটিবি লাগানো যাবে। |