পুরসভা, প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডে জলা ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলের মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার সঙ্গে দড়ি বেঁধে প্লট করে জমি বিক্রি হচ্ছে। এরপর সেই জলা জমি ভরাট করে তৈরি হচ্ছে বাড়ি। ইংরেজবাজার পুরসভার ২৫ নম্বর, ২৪ নম্বর এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া প্রায় হাজার বিঘার চাতরার বিল পুরসভা ও প্রশাসনের সামনেই দেদার ভরাট চলছে। পুরসভা ও জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর চুপচাপ বসে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, জমি মাফিয়ারা প্রতিদিন ভোর ৪টা থেকে ট্রাক্টরে করে মাটি ফেলে চাতরার বিল ভরাট করে চলেছে। |
ভূমি রাজস্ব দফতরের একাংশ বেআইনি ভাবে কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁদের অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, জমি মাফিয়াদের হামলার ভয়ে আশেপাশের এলাকার কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “চাতরার বিল ভরাট বন্ধ করতে পারছি না। জেলা প্রশাসন, ভূমি রাজস্ব আধিকারিক এবং ওই দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিকে চিঠি দিয়েছি। এখনও কেউ ওই বিল বন্ধ করার জন্য উদ্যোগী হননি।” জেলা ভূমি রাজস্ব আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ ডিউ বলেন, “ভরাটের খবর পেয়ে দফতরের আধিকারিকেরা ওখানে গিয়েছিলেন। যখন হানা দিচ্ছি তখন জলা ভরাট বন্ধ থাকছে। আমাদের পক্ষে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি সম্ভব নয়। পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলাম। পুলিশ কিছু করছে না।” জেলার ভূমি রাজস্ব আধিকারিক জানান, চাতরার বিল এখনও জলাশয় হিসাবে সরকারি নথিতে চিহ্নিত করা রয়েছে। যারা এই চাতরার বিল ভরাট করছে তারা বেআইনি করছে। দোষীদের শনাক্ত করে থানায় অভিযোগ জানানো হবে। পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জলা নিয়ে যদি কেউ অভিযোগ করে থাকেন তবে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।” ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর চন্দ্রা দাস বলেন, “বিল ভরাট রোখা আমার উপর নির্ভর করে না। চেয়ারম্যান আছেন, প্রশাসন আছে। অনেক দিন ধরে চাতরার বিল ভরাট চলছে। আজ চেয়ারম্যান এখানে বিল ভরাট দেখতে এসেছিলেন।” স্থানীয় কাউন্সিলর বিল ভরাট বন্ধ থাকার কথা বললেও শুক্রবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল বিলের ধারে মাটি পড়ে। ১০-১২ জন মজুর সেই মাটি জলায় ফেলছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ভোর ৪টা থেকে ১০-১২ টি ট্রাক্টর মাটি এনে বিল ভরাট করছে। সকাল ৮টার পর মাটি ফেলা বন্ধ করচ্ছে। তাঁরা প্রথমে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত ঘটনা কাউন্সিলর ও পুর চেয়ারম্যানকে জানান। এর পরেই জমি মাফিয়ারা তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া শুরু করেন। ভয়ে এগোনোর সাহস পাইনি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। |