বিদ্যুতের তারের মেরামতি করতে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় দুই জনের জখম হয়েছে। এই ঘটনার জেরে বুধবার দুপুরে কোচবিহারের পিলখানা এলাকায় উত্তেজিত জনতা বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। ধাক্কাধাক্কিতে জখম হয়েছেন বিভাগের আধিকারিক সুপ্রিয় ঘোষ। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃতের নাম নৃপেন দাস (২৭)। তাঁর বাড়ি তুফানগঞ্জের কালীবাড়ি এলাকায়। তিনি একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন। এদিন ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন রক্ষনাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে তিনজন শ্রমিক তড়িদাহত হন। দমকল কর্মীরা গুরুতর জখম ওই কর্মীদের উদ্ধার করে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। নৃপেন পরে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে মারা যান। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির আধিকারিক ও কর্মীরা পিলখানায় সরেজমিনে ঘটনার তদন্তে গিয়ে উত্তেজিত জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েন। দু’পক্ষের বাদানুবাদ-গোলমাল শুরু হয়। ধস্তাধস্তিতে সুপ্রিয়বাবু জখম হন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিসা করানো হয়। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশ আছে।” বন্টন কোম্পানির জেলা আধিকারিক বিষ্ণু দত্ত বলেন, “শ্রমিকেরা রক্ষনাবেক্ষনের কাজ করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। জখম তিন শ্রমিকের মধ্যে পরে একজনের মৃত্যু হয়। আমাদের দফতরের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। এক আধিকারিক জখম হয়েছেন।” এদিন তুফানগঞ্জের এক ঠিকাদারের আওতাধীন ১২ জন শ্রমিক কাজ শুরু করেন। খাগরাবাড়ি পাওয়ার সাপ্লাই স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পরেই তাঁরা কাজ শুরু করেন। নৃপেন দাস ও তার দুই সহকর্মী অনন্ত দাস, ফুলকুমার ভকত খুঁটির ওপরে কাজ করছিলেন। আচমকা ওই লাইনে সংযোগ চলে আসায় তাঁদের একজন নিচে ছিটকে পড়ে যান। অন্য দুই জন লাইনের ওপর ঝুলে পড়েন। মেরামতের কাজ শেষ হওয়ার আগে কী ভাবে বিদ্যুৎ চলে এল তা নিয়ে স্পষ্ট অবশ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্তারা কিছু বলতে পারেননি। বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী এক শ্রমিক মদন অধিকারী বলেন, “আমরা নিচে ছিলাম। ওঁরা তিনজন উপরে কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ হল। একজন নিচে পড়ে গেল। দুই জন তারেই ঝুলে ছিল। বন্ধ করে রাখা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করে দেওয়াতেই ঘটনাটি ঘটেছে।”
|
রায়গঞ্জ করোনেশনে বিক্ষোভ |
অভিভাবকদের আন্দোলনের জেরে রায়গঞ্জ করোনেশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবেদনকারী সমস্ত পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় দফতর। পাশাপাশি, সর্বশিক্ষা মিশনের বরাদ্দ ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা খরচে স্কুলে নতুন ক্লাসরুম তৈরির সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার অভিভাবকদের টানা বিক্ষোভের জেরে স্কুল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিভাবকরা সমস্ত আবেদনকারী পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়ার দাবি জানান। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় দফতরের কর্তাদের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে মোট আসন সংখ্যা ১২৫। বাইরের স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য কর্তৃপক্ষ ৪০টি আসন নির্দিষ্ট করে রেখেছিলেন। বাইরের স্কুলের ১৫০ জন পড়ুয়া ওই দুই শ্রেণিতে আবেদন করে। কর্তৃপক্ষ লটারির মাধ্যমে স্কুলের এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী ৪০ জন আবেদনকারীকে ভর্তি নেওয়ার কথা ঘোষণা করলে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিভাবকরা সমস্ত আবেদনকারী পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়ার দাবিতে স্কুল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ফলে লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এলাকার কংগ্রেস কাউন্সিলর সিগার দাসও। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শেখর রায় বলেন, “ওই স্কুলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে স্থানাভাব রয়েছে। তার জেরেই ভর্তি নিয়ে সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় দফতর আবেদনকারী পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাসরুম তৈরির জন্য সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনে ওই স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।” ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সিগার দাস বলেন, “বিক্ষোভ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাতে গোলমাল না-হয় সেই জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এলাকার সমস্ত পড়ুয়াকে ভতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক।”
|
কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থকদের সংঘর্ষের জেরে বুধবারও চাপা উত্তেজনা রয়েছে ইসলামপুর থানার আগডিমটি খুন্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুজাগাঁও এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে বোমা, গুলি, ঢিল ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। গুলিতে জখম হন এক সিপিএম কর্মী। তাঁকে প্রথমে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ও পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জখম হন দু’পক্ষের আরও ৪ জন। দু’পক্ষই এদিন ইসলামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কংগ্রেসের ওই এলাকার নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য দরুল ইসলাম বলেন, “সভা চলাকালীন সিপিএমের একদল দুষ্কৃতী হামলা চালায়। আমাদের কর্মী দারাজউদ্দিন আহত হন।” ইসলামপুরের সিপিএম নেতা স্বপন গুহনিয়োগীর পাল্টা অভিযোগ, “সংগঠনের কর্মসূচি সেরে হাটের পাশ দিয়ে ফেরার সময় আমাদের কর্মীদের লক্ষ্য করে কংগ্রেস সমর্থকেরা হামলা চালায়। তাদের ছোঁড়া গুলিতে আমাদের এক কর্মী আব্দুল হাকিম গুরুতর জখম হন। এ ছাড়া ঢিলের ঘায়ে আরও ৩ জন কর্মীও জখম হয়েছেন।” ইসলামপুর থানার আইসি সমীর পাল বলেন, “একটা গন্ডগলের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। দু’পক্ষই অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
|
গত কয়েক বছর ধরে বার বার প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে আবেদন করা সত্বেও মেলেনি বার্ধক্য ভাতার সুবিধে। এই অবস্থায় বুধবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেন এক বৃদ্ধ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৫ বছর বয়সী মামলাকারী ওই বৃদ্ধের নাম তফাজুল হক। তাঁর বাড়ি ইটাহার ব্লকের গুলন্দর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দৌলতপুর এলাকায়। সম্প্রতি তিনি রায়গঞ্জের সিভিল জজ জুনিয়ার ডিভিশন আদালতে মামলা দায়ের করার পর বিচারক আগামী ২১ মার্চ জেলাশাসক, ইটাহারের বিডিও ও গুলন্দর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে আদালতে হাজির হয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ পাঠিয়েছেন। বিডিও শেখ জহুর আলি বলেন, “আদালতের নির্দেশ পেয়েছি। আইন মেনে কাজ করব। ওই বৃদ্ধের নাম বিপিএল তালিকায় না থাকায় তিনি বার্ধক্যভাতার সুবিধা পাননি। কেনও বিপিএল তালিকায় তাঁর নাম নেই সেই বিষয়ে যা বলার আদালতে বলব।” জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তফাজুল হক একসময় চাষবাস ও দিনমজুরি করে সংসার চালালেও বর্তমানে তিনি অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই থাকেন। তাঁর একমাত্র ছেলে মহম্মদ এহিয়ার অভিযোগ, কয়েক বছর আগে বিপিএল তালিকায় বাবার নাম থাকলেও পরে তা কেটে দেওয়া হয়েছে।
|
দরজা ভেঙে ঢুকে এক ব্যবসায়ীর লক্ষাধিক টাকা লুটপাট করল একদল দুষ্কৃতী। বুধবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায়। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির খুব কাছেই মিঠাপোখর পুলিশ ফাঁড়ি। ১৫-১৬ জনের একটি দুষ্কৃতী দল সুরেশ শর্মা নামে এক পাইকারী ব্যবসায়ীর বাড়ির মেন গেটের দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে সোনার গহনা ও নগদ টাকা লুট করে। পুলিশ যাওয়ার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। |