গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুরের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। ৯ আসনের গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএমের ৩, কংগ্রেসের ২ এবং তৃণমূলের একটি আসন রয়েছে। বাকি তিনটি আসনের মধ্যে ২টি বিজেপি’র এবং অন্যটিতে জয়ী হয়েছেন এক নির্দল সদস্য। এতদিন কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে ওই পঞ্চায়েত চালাত। মঙ্গলবার তৃণমূল ও সিপিএমের মোট ৪ সদস্য ছাড়াও নির্দল সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন। হবিবপুরের বিডিও অভিজিৎ ঘোষ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে তলবি সভা ডেকেছেন। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস সরাসরি তৃণমূলকে ‘সিপিএমের বি-টিম’ বলে অভিযোগ করেছে। যদিও সিপিএমের ওই ৩ পঞ্চায়েত সদস্যের অবস্থান নিয়ে দলের জেলা সম্পাদক এবং জেলা তৃণমূল সভাপতির বক্তব্যে অনাস্থা প্রস্তাবের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র দাবি করেছেন, তাঁরা সিপিএমের কোনও সাহায্য নেননি। বরং সিপিএমের ওই ৩ পঞ্চায়েত সদস্যই তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সাবিত্রী দেবী বলেন, “সিপিএমের ওই তিন পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছেন। তার পরেই কংগ্রেসি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করা হয়েছে। এতেই দিশেহারা হয়ে কংগ্রেস উল্টোপাল্টা কথা বলছে। তৃণমূল আদৌ সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলায়নি।” অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র দাবি করেছেন, “ওই তিন পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা না-বুঝে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। ওই তিন পঞ্চায়েত সদস্যকে জেলা পার্টি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা জেনেবুঝে তৃণমূলের অনাস্থা প্রস্তাবে অংশ নিলে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।” তথা প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর অভিযোগ করেন, “মালদহে তৃণমূলের কোনও সংগঠন নেই। আমরা বহুদিন ধরে অভিযোগ করছিলাম তৃণমূল মালদহে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসকে ভাঙার চক্রান্ত করছে। আজ ফের তা হাতেনাতে প্রমাণিত হল। মানুষ দেখুক কে সিপিএমের বি টিম। তৃণমূল কী ভাবে কংগ্রেসকে ভাঙার খেলায় নেমেছে তা হাইকমান্ডকে জানানো হবে।” ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের একমাত্র তৃণমূল সদস্য পান্ডব সিংহের অভিযোগ, “কংগ্রেসের প্রধান নিজের ইচ্ছামতো পঞ্চায়েত চালাচ্ছে ন। ১০০ দিনের প্রকল্পে এলাকায় গাছ লাগানো হয়। বিডিও সেই বিল আটকে দেন। প্রধান কারও অনুমোদন না নিয়েই পঞ্চায়েতের তহবিল থেকে দেড় লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেন। ঠিকাদাররা ঠিকমতো কাজ করছে না, অথচ তাদের পেমেন্ট হয়ে যাচ্ছে। টিউবওয়েলের যন্ত্রাংশ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। প্রধানকে বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। দুনীর্তিগ্রস্ত প্রধানকে সরাতে আমি অনাস্থার ডাক দিয়েছিলাম। সিপিএমের তিন এবং এক নির্দল সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থায় সই করেছেন।” গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপালি লোহারের পাল্টা অভিযোগ, “তৃণমল ও সিপিএমের তিন সদস্য আমায় নিয়ম বহির্ভূত কাজ করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁদের বেআইনি কাজ না করায় একজোট হয়ে অনাস্থা এনেছেন।” |