নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শহরে বাড়ি তৈরির জন্য শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ তিন ধরনের নতুন ‘ফি’ চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিল বাম দলগুলি। ফি প্রত্যাহার না-হলে পুরসভার সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছেন তারা। পুরসভা সূত্রের খবর, বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে এলইউসিসি, সাইট প্ল্যান এবং নকশা অনুমোদনের জন্য ফি সংগ্রহ করা হয়। তা ছাড়াও নতুন করে তিন ধরনের ফি লাগু করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, নতুন বাড়ি তৈরি বা পুরনো বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে ধ্বংসাবশেষ সরানোর ফি। পাশাপাশি, বাড়ি তৈরির সময় ১ শতাংশ সেস নেওয়ার প্রক্রিয়াও এই মাস থেকে চালু করা হয়েছে। মঙ্গলবার পুরসভার মাসিক সভায় নতুন এই তিন ধরনের ফি নেওয়ার প্রতিবাদে সরব হন বিরোধী কাউন্সিলররা। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলরদের একাংশের মধ্যেও ওই ফি লাগু করা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “বাসিন্দাদের সমস্যার বিষয়টি আমরা নিশ্চয়ই দেখব। রাজ্য সরকার আমাদের কাছে ‘সেস’-এর টাকা চাইছে। সে কারণেই তা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া রাস্তা, ড্রেন তৈরির খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সে কারণেই তার জন্য আলাদা করে ফি নেওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ বাসিন্দাদের যাতে সমস্যা না-হয়, সে জন্য কিছু ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।” বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম জানান, এলইউসিসি এবং সাইট প্ল্যান হিসাবে যে টাকা নেওয়া হয় তা মূলত এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যই। তার পরেও আলাদা করে ফি বাসিন্দাদের কেন দিতে হবে? তিনি বলেন, “নতুন ফি ধার্য না করতে বোর্ড মিটিংয়ে বলা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষকে শীঘ্রই তা প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। কাজ না হলে পুরসভার সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করা হবে।” বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা জানিয়েছেন, মেয়র পারিষদের বৈঠকের পর, বোর্ড মিটিংয়ে পেশ করে পরিকাঠামো খাতে এবং বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আবর্জনা পুরনো বাড়ি ভাঙার ধ্বংসাবশেষ সরাতে ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁর দাবি, “তখন বিরোধীরা কিছু বলেননি। এখন লাগু করার পরে বাধা দিচ্ছেন। সাধারণ বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে সেখানে ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।” শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বও এ ব্যাপারে এক মত। সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “নতুন করে ফি সংগ্রহের নামে করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমরা সকলেই। পাশাপাশি পুরসভার অতিথি নিবাসগুলির ফি বাড়ানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামব।” আরএসপি নেতা রাম ভজন মাহাতো, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা স্মৃতীশ ভট্টাচার্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কর বাড়ানো হবে না বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নির্বাচনের সময়, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বাজেট বৈঠকে কর না বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। অথচ বাস্তবে পুর কর্তৃপক্ষ অন্য পথে হাঁটছেন। |