আশ্বাস দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। সেই অনুসারে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)-র তিন হাজারের বেশি স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীর ডিসেম্বরের বকেয়া মাইনে দেওয়ার জন্য বুধবার সওয়া পাঁচ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে পরিবহণ দফতর। তাঁদের মধ্যে আছেন ২৫৫৬ জন স্থায়ী এবং ৫০০ জন অস্থায়ী কর্মী।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র নিজেই এ দিন ওই সংস্থার কর্মীদের বকেয়া বেতন মেটানোর কথা জানান। তিনি বলেন, এসবিএসটিসি-কর্তৃপক্ষ তাঁদের কর্মী-সংখ্যা সম্পর্কে ইতিমধ্যে কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই কারণেই ওই সংস্থার কর্মীদের ডিসেম্বরের বকেয়া বেতন বাবদ ভর্তুকির টাকা ছেড়ে দেওয়া হল। কাগজপত্র তৈরি থাকলে পেনশনের টাকাও ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। কাজকর্মের নিরিখে পাঁচটি পরিবহণ নিগমের মধ্যে এসবিএসটিসি-র রিপোর্ট সব চেয়ে ভাল হলেও ওই সংস্থার কর্মীদের মাইনে বাবদ সরকারকে মাসে ছ’কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আগামী শনিবার তিনি দুর্গাপুরে গিয়ে এসবিএসটিসি-র শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান মন্ত্রী।
পরিবহণমন্ত্রী জানান, অন্য চারটি পরিবহণ সংস্থা (সিএসটিসি, সিটিসি, এনবিএসটিসি এবং ভূতল পরিবহণ নিগম) নিজেদের কর্মী-সংখ্যার সবিস্তার হিসেব নিতে আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ওই সব নিগমের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের মহাকরণে ডেকেছেন। ওই চার নিগম কর্মীদের যথাযথ হিসেব দিতে পারলে সেগুলির তাদের কর্মীদের ডিসেম্বর ও জানুয়ারির বকেয়া বেতনের টাকা একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা হলে বেতন খাতে সেখানকার কর্মীদের আর কোনও বকেয়া থাকবে না। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ডাকা হয়েছে এসবিএসটিসি-র কর্তাদেরও। বিপুল ভর্তুকিতে চলা সরকারি পরিবহণ নিগমগুলির পুনরুজ্জীবনের পথ খুঁজে বার করতে মুখ্যমন্ত্রী গত সপ্তাহে পাঁচটি সংস্থার কর্তা ও শ্রমিক সংগঠনগুলিকে মহাকরণে বৈঠকে ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, আপাতত আরও ছ’মাস ওই সংস্থাগুলির কর্মীদের মাইনের দায়িত্ব নেবে সরকার। তার মধ্যে সংস্থাগুলিকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর কার্যকর পথ খুঁজে বার করতে হবে। তাই ১৫ দিনের মধ্যে সংস্থাগুলিকে পাইলট প্রজেক্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। পরিবহণমন্ত্রী জানান, ওই সংস্থাগুলিতে কতটা কাজ হল, এক মাস পরে মুখ্যমন্ত্রীকে ফের তা বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাঁচটি পরিবহণ নিগমে মোট কর্মীর সংখ্যা ১৮ হাজার। কিন্তু ১১০০টি সরকারি বাসের মধ্যে দৈনিক গড়ে রাস্তায় বেরোয় মাত্র ৪৫০টি বাস। সরকার চায়, আরও বেশি সংখ্যায় বাস নামিয়ে, পরিষেবার উন্নতি ঘটিয়ে নিগমগুলি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ করে নিক। মদনবাবু এ দিন বলেন, পরিবহণ নিগমগুলির কর্মীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে। যে-সব চালকের আর বাস চালানোর মতো শারীরিক সক্ষমতা নেই, তাঁদেরও বসিয়ে রাখা চলবে না। সক্ষমতা অনুযায়ী তাঁদের অন্য কাজ দিতে হবে। |