২০১২ সালের পঞ্চম শ্রেণির সরকারি ইতিহাস বইয়ের প্রচ্ছদ দিয়ে তৈরি থালা বিকোচ্ছে বসিরহাটের বাজারে। বইগুলি এখনও সব স্কুলে পৌঁছয়নি। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে তার প্রচ্ছদ দিয়ে থালা তৈরি হয়ে গেল, তা ভাবাচ্ছে শিক্ষক মহলকে। ছাপানো কাগজ আসল না নকল, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্ধ। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দ্বীপায়নকুমার দাস। তিনি বলেন, “বই ছাপা হয় সরকারি প্রেসে। যে পরিমাণ বই দরকার, তা এখনও আমাদের হাতে পৌঁছয়নি। |
ফলে, আমাদের দফতর থেকে কোনও ভাবে বইয়ের প্রচ্ছদ বেরোনোর সুযোগ নেই। কী ভাবে এমন ঘটল, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।”
বসিরহাটের স্কুল শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার অধিকাংশ স্কুলে এখনও সরকারি বই আসেইনি। অথচ ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অসুবিধায় পড়েছে ছেলেমেয়েরা। বসিরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপনকুমার রায় বলেন, “ইতিহাস-সহ কয়েকটি বিষয়ের সরকারি বই এখনও আমাদের স্কুলে এসে পৌঁছয়নি। যত দূর জানা গিয়েছে, মহকুমার অধিকাংশ স্কুলেই এই অবস্থা।” এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে চলতি বছরের বইয়ের প্রচ্ছদ দিয়ে কী ভাবে থালা তৈরি হল, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। বসিরহাট পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শৈলেন পাল বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য পদস্থ কর্তাদের জানানো হয়েছে।” বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক শৈবাল নন্দীও।
পুস্তক বিক্রেতাদের একাংশ আবার জানিয়েছেন, সরকারি বই হাতে পেতে পেতে অনেক ক্ষেত্রে কয়েক মাস কেটে যায়। ইতিমধ্যে কলকাতা, বনগাঁ, হাওড়ার মতো কিছু এলাকায় নকল বই ছাপার কাজ শুরু হয়ে যায়। তাদের কারও প্রচ্ছদ ছাপায় গণ্ডগোল থাকায় তা বিক্রি করে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। যে সব দোকানে কাগজের থালা বিক্রি হচ্ছে, তাদের এক জনের কথায়, “এ সব প্লেট আমরা কলকাতার বড়বাজার থেকে কিনে আনি। এতে কী ছাপা আছে, তা দেখার অত সময় কোথায়!” |