‘ঘুরে দাঁড়ানো’র ব্যাপারে সংশয় সিপিএম নেতৃত্বের
০০ দিনের প্রকল্পে খাল খোঁড়ার সময়ে বুধবার একটি অখণ্ড কঙ্কাল, একটি মাথার খুলি এবং কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হল পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-২ ব্লকে। সেগুলি নন্দীগ্রামের ‘নিখোঁজ’দের বলেই দাবি করলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে ‘নিখোঁজ’ ভূমি-কমিটির সদস্য-সমর্থকদের খুন করে প্রমাণ লোপের জন্য দেহ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেই চার্জশিটে দাবি করেছে সিআইডি।
এ দিন সকালে সাপুয়ায় ১০০ দিনের প্রকল্পে খাল খনন চলছিল। সে সময়েই ওই কঙ্কাল, খুলি ও কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয় বলে স্থানীয় ও ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। একই জায়গা থেকে উদ্ধার হয় একটি রঙিন শাড়ির অংশও।
মেদিনীপুর শহরে সিপিএমের প্রকাশ্য সমাবেশে জনসমাগম। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
এক সময়ের ‘লালদুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুরে কি সিপিএম ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? এই প্রশ্নে সংশয় দলের অন্দরেই। এক দিকে তৃণমূলের ‘পরাক্রম’, অন্য দিকে ‘গণতন্ত্র নেই’, ‘অতিকেন্দ্রিকতা চলছে’ বলে দলের ভিতরেই অভিযোগ, ক্ষোভ। এই দুই সমস্যার মোকাবিলা করে আগামী দিনে কী ভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে জেলা সম্মেলনে সুস্পষ্ট কোনও দিশা মেলেনি। উল্টে রাজ্য নেতৃত্বের সামনেই দলের কাজকর্ম নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন উঠেছে। সব প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি।
যদিও সম্মেলন শেষে রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর দাবি, “উন্নত মানের আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়েই অনেক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হয়েছে। মিথ্যে মামলা হয়েছে। পরে প্রমাণ করা যায়নি। আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে, শহর ও গ্রামের গরিব মানুষের উপরে আরও বেশি করে আলোকপাত করতে হবে। দল যাঁদের সমর্থন হারিয়েছে আবার তাঁদের সমর্থন ফিরিয়ে আনতে হবে।” গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি জেলায় দলের সম্মেলনের পরে বিমানবাবু কমবেশি এমনই বলে চলেছেন। ফলে সে দিক থেকে মেদিনীপুরে মঙ্গলবার রাতের সাংবাদিক বৈঠকেও বিমানবাবু তেমন তাৎপর্যপূর্ণ কিছু বলেননি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমের ৩৩টি জোনাল কমিটি মিলিয়ে সাড়ে ৩৪ হাজার পার্টি-সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৫৫ জন প্রতিনিধিত্ব করলেন সোম ও মঙ্গলবার জেলা পরিষদ হলে আয়োজিত ২১ তম জেলা সম্মেলনে।
মঞ্চে বিমান-বুদ্ধ-সূর্যকান্ত। নিজস্ব চিত্র।
সর্বমোট ৫৪ জন প্রতনিধি আলোচনায় অংশ নেন। প্রতিনিধিরা জেলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশিই দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও ‘সরব’ হন। রাজ্যে পরিবর্তনের পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘হাড়গোড়’, ‘বেআইনি অস্ত্র’ উদ্ধারের হিড়িক পড়েছিল। পরের পর মামলা দায়ের হয়। সে সব মামলায় জড়িয়ে যায় বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীদের নাম। কিন্তু নেতৃত্ব সে-ভাবে ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ ঘিরেই সবচেয়ে ‘সরগরম’ ছিল সম্মেলন।
জেলা সম্পাদক পদে দীপক সরকারের পুনর্নির্বাচন এক রকম পূর্ব-নির্ধারিতই ছিল। তা হয়েওছে। কিন্তু দল পরিচালনা নিয়ে ‘গণতন্ত্রহীনতা’র অভিযোগও তাঁকে শুনতে হয়েছে। ‘অতি-বিতর্কিত’ কয়েক জনের জেলা কমিটিতে পুনর্নির্বাচন ঘিরেও প্রশ্ন উঠেছে। আবার মিহির পাহাড়ি, শিবনাথ গুহদের জেলা-কমিটিতে নির্বাচনও কিছুটা বিস্ময় তৈরি করেছে। কিছু দিন আগেই তাঁদের জোনাল নেতৃত্ব (যথাক্রমে, খড়্গপুর গ্রামীণ এবং ঝাড়গ্রাম শহর) থেকে সরানো হয়েছিল। কেনই বা সেই অপসারণ, কেনই বা আবার জেলা কমিটিতে মনোনয়নসে প্রশ্ন ওঠে। নতুন ৮ জন জেলা-কমিটি সদস্যের মধ্যে এ বারও তরুণ রায়ের স্ত্রী রুবি রায়ের ঠাঁই না হওয়া নিয়েও গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। দীপকপন্থী নন বলেই কি এ বারও উপেক্ষিতপ্রশ্ন সেটাই।
আগে ছিল ৭৮ জনের জেলা-কমিটি। মূলত বার্ধক্যজনিত কারণে এ বার ১৬ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শান্তুনু চক্রবর্তী, কমল পলমল, প্রদীপ সরকার, উদ্ধব মাহাতো, উত্তম মণ্ডল, বিরাম মান্ডি, আরতি বসু ও হেনা শতপথী--এই ৮ নতুন মুখ জেলা কমিটিতে। যাঁদের অনেকেরই অন্তর্ভুক্তি জোনাল সম্পাদক হিসাবে। আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে আগের সম্পদকমণ্ডলীর দুই সদস্য শেখ ইজরায়েল ও শোভানাথ বসুকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.