তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের তোপ দাগলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য।
বুধবার উলুবেড়িয়ায় দলের হাওড়া জেলা তফসিলি জাতি ও উপজাতি সেলের সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “এই সরকার আমাদেরও সরকার। কারণ সরকারে আমরাও আছি। আমাদের দলের ছ’জন মন্ত্রী রয়েছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের দলের মন্ত্রী বা দলের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হচ্ছে না। সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা দেখে সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানতে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের মন্ত্রী এবং দলের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।”
একই সঙ্গে তিনি অবশ্য বলেন, “আট মাসের একটা সরকার। আমরা আশা করি না মাত্র এই ক’মাসে এই সরকার সব সমস্যার সমাধান করবে। কিন্তু তৃণমূল বিধায়কদের জয়ী হওয়ার পিছনে আমাদের দলের যে নৈতিক সাহায্য রয়েছে, তা স্বীকার করে সরকার চালানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ে আমাদের দলের সঙ্গে আলোচনা করা হোক। সেটাই আমরা চাই।”
রাজ্যে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে তিক্ততা দেখা দিয়েছে। মন্ত্রিসভার কংগ্রেস সদস্য মনোজ চক্রবর্তীর পদত্যাগ সেই বিতর্কের শেষতম সংযোজন। |
প্রদীপবাবু তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সুর’ চড়া করলেও অবশ্য পাশাপাশি এ-ও বলেন, “কোনও কোনও মহল থেকে প্রচার করা হচ্ছে আমরা জোট চাই না। এটা ঠিক নয়। ৩৪ বছরে সিপিএমের অপশাসন থেকে এই রাজ্যকে মুক্ত করেছি জোট বেঁধে লড়াই করেই। সিপিএমকে আমরা আর চাই না।”
সরকারের প্রধান শরিক তৃণমূলের প্রতি এ প্রসঙ্গেই প্রদীপবাবু ফের ‘পরামর্শ’ দেন, সরকার চালাতে গিয়ে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে ‘সমন্বয়’ ঘটাতে রাজ্য পর্যায়ে ‘কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গড়া হোক। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “রাজ্য পর্যায়ে একটি কোঅর্ডিনেশন কমিটি তৈরির কথা আগেই বলেছিলাম। আবারও সে কথা বলছি। এই কমিটিতে আলোচনা করে অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়।”
প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “আমাদের দলের তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ৯ জন বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি তাচ্ছিল্য দেখানো হচ্ছে। একটা কথা সাফ জানিয়ে দিতে চাই। আমাদের দলকে কেউ উপড়ে দিতে পারবেন না। অনেকে আমাদের দলকে কটাক্ষ করে বলছেন ‘‘দূর ওদের আর কী আছে?” আর ছ’মাসের মধ্যে দেখে নেবেন আমাদের কী আছে।” তৃণমূলের প্রতি প্রদীপবাবুর ‘বার্তা’, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চলুন। এক সঙ্গে চলুন। সিপিএম অগণতান্ত্রিক উপায়ে, স্বৈরাচারী পথে চলত। সিপিএমের দেখানো সেই পথে চলবেন না।”
কেন্দ্রের ধাঁচে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের চাকরি পাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য যে ধরনের কমিশন রয়েছে, রাজ্যেও সে রকম একটি কমিশন গড়ার দাবি জানান প্রদীপবাবু। বলেন, “রাজ্য কমিশনের রূপরেখা কেমন হবে, সে বিষয়ে আমাদের দলের বিধায়ক অসিত মাল খসড়া তৈরি করবেন। সেটি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিতে অনুমোদিত হওয়ার পরে তা আমরা তুলে দেব মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। |